SSC চাকরি বাতিল: যোগ্য - অযোগ্য বিভাজন আদৌ সম্ভব?
পরীক্ষা হল 2016'য়, চাকরি হল 2018'য় আর 2019'এ SSC নষ্ট করে দিল সমস্ত উত্তরপত্র i.e. OMR শিট।
আইনের প্রভিশন অনুযায়ী এইভাবে সরকারি রেকর্ড ডেসট্রয় করতে হলে তার কপি রেখে ডেসট্রয় করার কথা, তাও আবার সে বিষয়ে কোনো লিটিগেশন না থাকলে তবে। কিন্তু এইসব আইনি নিয়মকে কাঁচকলা দেখিয়ে SSC শুধু OMR শিট ডেসট্রয় করল তাই নয়, কোনো scanned কপি পর্যন্ত রাখল না।
গোটা 23 লক্ষ পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য তাই চলে গেল ভোগের বাড়ি।
পরীক্ষা দিয়েছিল 23 লক্ষ চাকরিপ্রার্থী ক্যাণ্ডিডেট। তাদের মধ্যে চাকরি পেল 25000 জন। ধরা যাক্ এর মধ্যে 5000 জন পেয়েছে grossly বেআইনি পদ্ধতিতে (অর্থাৎ যাদের জন্য সুপারনিউমেরারি পদ সৃষ্টি করতে চেয়েছিল মন্ত্রীসভা) আর বাকি 20,000 পেয়েছে তথাকথিত আইনি পদ্ধতিতে। অর্থাৎ পরীক্ষা দিয়েও চাকরি পায় নি 22 লক্ষ 75 হাজার চাকরিপ্রার্থী।
এবার আসা যাক পরবর্তী ধাপে। SSC যে তথাকথিত 'মেরিট লিস্ট' প্রকাশ করেছিল তাতে চাকরিপ্রার্থী ক্যাণ্ডিডেটদের নাম থাকলেও প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ ছিল না। অর্থাৎ এই লিস্ট আদৌ মেরিট লিস্ট কি না তা বোঝার কোনো উপায় সাধারণ মানুষের নেই। তাহলে কে প্রকৃত যোগ্য আর কে আদতে অযোগ্য তা জানার উপায় আর রইল কোথায়?
যাদেরকে সফল পরীক্ষার্থী বলে ঘোষণা করা হয়েছিল তথা যাদেরকে আজ "যোগ্য ক্যাণ্ডিডেট"এর তকমা দেওয়ার চেষ্টা চলছে, মোট ২৩ লক্ষ পরীক্ষার্থীর বাকি 22 লক্ষ 75 হাজার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে তাদের চাইতে বেশি নম্বর অন্য কেউ যে পায় নি তা বোঝার উপায় কি? উত্তর হল, কোনো উপায় নেই। আদত যোগ্য কারা ছিল তা বোঝার উপায় কি? উপায় কিছুমাত্র নেই। কারণ SSC যে তালিকা প্রকাশ করেছিল তা আদতে মেধাতালিকা ছিল কি না সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার উপায় নেই কারণ 23 লক্ষ OMR শিট SSC কপি না রেখে নষ্ট করে ফেলেছে।
3 টি হার্ড ডিস্কে পঙ্কজ বনশল নামক ব্যক্তির কাছ থেকে OMR শিটের কপি সংগ্রহ করেছে CBI. কিন্তু সেই OMR শিটগুলিই যে আদত পরীক্ষার্থীদের OMR শিট তা বুঝতে হলে SSC'র সার্ভারেও সেই OMR শিটগুলির সফট্ কপি থাকা দরকার ছিল। কিন্তু SSC'র সার্ভারে সেরকম কোনো ডেটা CBI পায় নি এবং আদালতে জমা পড়া CBI'এর রিপোর্টে তার উল্লেখ আছে।
আরও মারাত্মক বিষয় হল, নানাপ্রকার RTI query জমা পড়েছে SSC'র কাছে এবং SSC তার জবাব দিয়েছে নিজেদের সার্ভারে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে যেখানে বাস্তবে SSC'র সার্ভারে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্রের কোনো তথ্যই CBI পায় নি। অর্থাৎ RTI'এর যে জবাব SSC দিয়েছে সেগুলি আদতে SSC'র মনগড়া মিথ্যে কথা কারণ তার সাপোর্টিং এভিডেন্স SSC'র কাছে প্রকৃতপক্ষে নেই।
পঙ্কজ বনশল যেহেতু একজন প্রাইভেট পার্সন অতএব তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যোগ্য - অযোগ্য মূল্যায়ন সম্ভব নয়। সে মূল্যায়নের জন্য SSC'র কাছে রক্ষিত তথ্যের সঙ্গে সেগুলির ক্রস ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু SSC'র কাছে যেহেতু কোন তথ্যই নেই, অতএব পঙ্কজ বনশলের থেকে প্রাপ্ত তথ্য এক্ষেত্রে বেকার জিনিস।
উপরন্তু, নাইসাকে উত্তরপত্র মূল্যায়নের বরাত দেওয়ার গোটা পদ্ধতিটিই ছিল বেআইনি। অতএব নাইসার করা মূল্যায়নও বেআইনিই।
তাই প্রকৃত যথাযথ পুনর্মূল্যায়ন সম্ভব নয়। 5000 বা 6000 নয়, গোটা 26000'ই যে অযোগ্য ক্যাণ্ডিডেট নয় তার কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই এবং তা যাতে না থাকে তার সমস্ত ব্যবস্থা পাকা করেছে SSC, নিজেদের হাতে। গোটা প্যানেল বাতিল হওয়াই তাই এক্ষেত্রে একমাত্র যুক্তিসঙ্গত ও আইনসঙ্গত উপায়।
যাদের দেওয়া চাকরির 5000/6000 চাকরি অযোগ্যদের দেওয়া হয়েছে, তাদের দেওয়া বাকি 20000 চাকরি যে যোগ্যদেরকেই দেওয়া হয়েছে তার প্রমাণ কি? "জয়বাবা ফেলুনাথ" ছবিতে বিকাশ সিংহকে বলা ফেলুদা'র সেই ডায়লগ মনে আছে তো? "যার একটা মিথ্যে ধরা পড়ে গিয়েছে..." দেখুন। 👇(নিম্নে প্রদত্ত ফেসবুক পোস্টের লিঙ্ক দ্রষ্টব্য, ভিডিও সেখানে)
https://twitter.com/DebjaniBhatta20/status/1785307688118940130?t=s1fAPxhwaiSPf9PDhuGJ7w&s=19
https://twitter.com/DebjaniBhatta20/status/1786634387385438474?t=ML6tkGfWg5XMJ64p95PUTw&s=19
ফেসবুক পোস্টের লিঙ্ক👇
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=pfbid0HFWKoRDJ6xUVh2XcB1bMaaWDCeJNkT7Bv4rWfF2cxMb5aoeqNUdGfdfjVbwnLhe6l&id=100016692693608&mibextid=Nif5oz
Comments
Post a Comment