নব্য কথামালা: শেয়াল ও সারসের গল্প

কথামালার ঐ গল্পটি মনে আছে? সেই সারস আর শেয়ালের বন্ধুত্বের গল্পটা? দুষ্ট, ধূর্ত শেয়াল সারসকে অপমান করার জন্য বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে চ্যাপটা থালায় খাদ্য পরিবেশন করেছিল। ঠিক যেমন থালায় খেতে শেয়ালের সুবিধা হয় আর কি! সারস তার লম্বা ঠোঁট দিয়ে চ্যাটালো থালা থেকে কিছুই গ্রহন করতে পারে না। কিন্তু অপমান হজম করে নেয় এবং শেয়ালের কাছে তার আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে ও শেয়ালকে একদিন তার বাড়িতে পাল্টা নিমন্ত্রণ করে ফিরে আসে। এবার শেয়াল যেদিন সারসের বাড়িতে এসে হাজির হয়, সেদিন সারস কলসীর মধ্যে খাদ্য পরিবেশন করে। তার নিজের তাতেই সুবিধা এবং সারস কলসীর মধ্যে লম্বা ঠোঁট ঢুকিয়ে খাবার আদ্যন্ত উপভোগ করে কিন্তু শেয়াল কিছুই খেতে পারে না কারণ কলসীতে শেয়ালের মুখই ঢোকে না। কিন্তু এবার পাল্টা কিল খেয়ে কিল হজম করা ছাড়া শেয়ালের কিছু করার থাকে না। শেয়ালকেও কিছু না খেয়েই নিজের সম্মানরক্ষার্থে সারসের আপ্যায়নের প্রশংসা করতে হয়। মনে পড়ছে? গল্পের নীতিকথাটি ছিল, শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ।

বর্তমান ভারতবর্ষে শেয়ালের মত শঠের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়, যারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সৎ জনসাধারণরূপী সারসের সঙ্গে শঠতা করেছে এবং যেখানে সুযোগ পাচ্ছে, আজও তা করে চলেছে। জনসাধারণ নিজেদের মধ্যে থেকে একজন সর্বোপযুক্ত সারসকে বেছে নিয়েছে এবং আশা করেছে যে সে ওই শঠ শেয়ালদের শঠতার যথোপযুক্ত জবাব দেবে।

না, ভুল বললাম। তারা আশা করেছিল যে সে ঐ সব শেয়ালদের বন্দী করে ফেলবে এবং তাদের শঠতার শাস্তি দেবে। কিন্তু আশা যেহেতু এই পর্বতপ্রমাণ, ফলে প্রধান প্রতিনিধি সারস শেয়ালদের শঠতার জবাব পাল্টা শঠতার মধ্যে দিয়ে দিতে উদ্যত হওয়াতেও সাধারণ জনগণের অনেকেই খুশি নয়। তারা তাদের প্রধান প্রতিনিধি সারসকে কেবল শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ করতে দেখে সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তারা চাইছে প্রধান প্রতিনিধি সারস সমস্ত শেয়ালদের ধরে জেলে পুরুক। কিন্তু প্রকৃত শঠদের সঙ্গে পাল্টা শঠতা হচ্ছে এবং হয়েই চলেছে। প্রথম দিকে শেয়ালেরা কিল খেয়ে কিল হজম করে কিছুদিন চুপ করে থাকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রধান প্রতিনিধি সারসের পাল্টা শঠতার প্যাঁচে দিনে দিনে ধীরে ধীরে পাকেচক্রে তারা এমনই জড়িয়ে পড়ছে যে এবার শেয়ালেরা আর চুপচাপ কিছু হজম করে নিতে পারছে না। তারা এবার একযোগে হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া ডাকতে শুরু করেছে। সব শেয়ালের এক রা! যে কোনো উপায়ে প্রধান প্রতিনিধি সারসকে তারা থামাতে চায়।

ওদিকে সব শেয়ালের এক রা শুনেও সরল অথচ উচ্চাকাঙ্খী ও প্রতিশোধপরায়ণ কিছু সারস তাদের প্রধান প্রতিনিধি সারসের কার্যকলাপে তত খুশি নয়। তারা প্রধান প্রতিনিধি সারসের থেকে আশা করছে আরও নাটকীয় কিছু..."অজানি দেশের না জানি কি"। অর্থাৎ ঠিক কি যে তারা আশা করছে, তা তারা নিজেরাই সম্যক জানে না। এত বছর ধরে শেয়ালদের করে চলা এই ধূর্তামির এক চরম নাটকীয় অথচ চটজলদি সাজা দেখতে চায় এই সরল অথচ উচ্চাকাঙ্খী সারসেরা। কিন্তু তারা বুঝতেই পারছে না যে প্রধান প্রতিনিধি সারস যা কিছু করছে তা যদি সে সম্পূর্ণ করতে পারে তবে শঠ শেয়ালদের নাভিশ্বাস উঠেই তারা শেষ হবে। তাদেরকে আর আলাদা করে বন্দী করে মারবার প্রয়োজন হবে না। জল তাদের মাথার ওপর দিয়ে বইছে বলেই তারা সব একজোট হয়েছে এবং বিকট জোরে সম্মিলিত হুক্কাহুয়া রবে আকাশবাতাস কাঁপিয়ে তুলেছে।

এখন আমাদের সারসদের কাজ হল প্রধান প্রতিনিধি সারসের পাশে থেকে তাকে শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ চালিয়ে যেতে সাহায্য করা। কিন্তু কথা হল, সারসদের দলে বেশ কিছু সরল, অথচ পণ্ডিতম্মন্য, উচ্চাকাঙ্খী ও অধৈর্য প্রকৃতি সারস আছে যারা চায় যে প্রধান প্রতিনিধি সারস চোখের পলক ফেলতেই সাত দশকের সমস্ত শঠ শেয়ালকে এবং তাদের সমস্ত শঠতাকে শায়েস্তা করুক। তাদের অনেকেরই বক্তব্য হল যে তা যদি সে না-ই করতে পারে, তাহলে আর শেয়ালের সঙ্গে প্রধান প্রতিনিধি সারসের তফাৎ রইল কোথায়? একথা বলার সময় ওই সরল, অথচ পণ্ডিতম্মন্য, উচ্চাকাঙ্খী ও অধৈর্য সারসেরা ভুলে যাচ্ছে যে শেয়ালেরা তো সারসদের সঙ্গে শঠতা করেছে, কিন্তু প্রধান প্রতিনিধি সারস সারসকুলের সঙ্গে, আর যাই হোক্, কোনো শঠতা করে নি। তাছাড়া শেয়ালেরা যে শুধু সারসদের সঙ্গে শঠতা করেছে তা-ই নয়, প্রয়োজনে সারসদের তারা খেয়েও ফেলবে।

তাছাড়াও আছে আরও একটি বিষয়। যে সব জনগণ নিজেদের সারস বলে ভাবছে, তাদেরও অনেকে আসলে ভেতরে ভেতরে শেয়াল, যাদের চ্যাটালো থালা থেকেই খেতে সুবিধে হয়। প্রধান প্রতিনিধি সারস তাদের কলসীতে খেতে দিয়েছে বলে তাদেরও আসলে খেতে অসুবিধেই হচ্ছে। এরা নিজেদের সারস বলে ভাবলেও, আসলে পূর্ণ সারস নয়। বরং অংশতঃ এরা শেয়াল। কিন্তু নিজেদের অন্তঃকরণের ভিতরের শেয়ালত্ব সম্বন্ধে নিজেরাই সচেতন নয়। তবে এদের শেয়ালত্ব যেহেতু ভিতরে ভিতরে এবং এদের নিজেদের অজান্তেই, তাই আশা করা যায় যে তারা ক্রমশঃ নিজেদের সারসত্বকে শেয়ালত্বের উপরে প্রাধান্য দিতে আরম্ভ করবে এবং কলসীতে খাওয়া ধীরে ধীরে তাদের অভ্যেস হয়ে যাবে। আর প্রকৃত শেয়ালেরা না খেতে পেয়ে মরবে। তাই বুদ্ধি বলছে যে প্রধান প্রতিনিধি সারস যখন সব শেয়ালের গলায় 'এক রা' তুলে দিতে পেরেছে, তখন ধরিই না ধৈর্য, করিই না অপেক্ষা! দেখিই না প্রধান সারসের পরিকল্পনায় আরও কি কি আছে! শেয়ালদের অন্তিম পরিণতি ঠিক কি হয় তা দেখার জন্য আমাদের সারসদের ধৈর্য ধরতেই হবে। 

প্রধান প্রতিনিধি সারসকে অকৃতকার্য ভেবে জনগণ যদি শেয়ালদের সঙ্গে তাকে তুলনা করে, তবে চিরকাল শেয়ালেরা সারসদের সাথে শঠতাই করে যাবে। পাল্টা শঠতা দিয়ে শঠে শাঠ্যং সমাচরেৎ করার সুযোগ জনগণের আর থাকবে না।

গল্পটি allegorical. চ্যাপটা থালা বা সরু গলা কলসী হল দেশের আইনব্যবস্থা। এতকাল দেশের অর্থনৈতিক আইনব্যবস্থাটি ছিল চ্যাপটা থালার মত flat, lucid এবং ছড়ানো অর্থাৎ disorganized এবং সেই কারণেই প্রচুর ফাঁকফোকরযুক্ত। ফলে যারা চেটে চেটে খায়, যেমন শেয়ালেরা, তাদের  পক্ষে আইনব্যবস্থার সেই ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে চেটে চেটে 'খাওয়া' অর্থাৎ দেশের সম্পদকে উপভোগ করা সহজ হয়েছে। যে যত বেশি মরিয়া ও নির্লজ্জ হতে পেরেছে সে চ্যাটালো থালার মত flat আইনব্যবস্থার ফাঁকফোকর গলে দেশের তত বেশি সম্পদ আহরন করতে পেরেছে। সারসের লম্বা, শক্ত ঠোঁট এক্ষেত্রে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও ঋজুতার প্রতীক। সারসের ঠোঁটের মত ঋজুতা যাদের চরিত্রে ছিল, দেশের এতকালের আইনব্যবস্থার মধ্যে থেকে দেশের সম্পদের উপর তাদের ন্যায্য অধিকারটুকু প্রয়োগ করতেও তাদের অসুবিধা হয়েছে। কারণ ছড়ানো আইনের ফাঁকফোকর গলে চেটে চেটে খাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।  ঠিক ওই সারসের মত। সারস যেমন শেয়ালের বাড়িতে চ্যাপটা থালা থেকে কিছুই প্রায় খেতে পারে নি, সেরকম এই ঋজু চরিত্রের মানুষগুলোও, সংখ্যায় তারা যত নগণ্যই হোক্, এতকাল দেশের ফাঁকফোকরযুক্ত আইনব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে চেটে খেতে পারে নি। কিন্তু বর্তমান আইনব্যবস্থাটি ক্রমশঃ হয়ে উঠছে কলসীর মত। অর্থাৎ থালার মত flat, ছড়ানো নয় বরং একটি নির্দিষ্ট কাঠামোযুক্ত, formatted, গভীরতাসম্পন্ন ও organized. ফলে সারসের মত ঋজু চরিত্রের সহজ, সরল, straightforward মানুষেরা authentically সেই format এর সাথে comply করলেই নিজেদের ন্যায্য প্রাপ্যটুকু পেতে পারবে ও পারছে। কিন্তু তার জন্য সেই সহজ, দৃঢ় ভঙ্গিমায় দেশের নতুন অর্থনৈতিক আইনব্যবস্থার পরিকাঠামোর সঙ্গে তাদের নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে হচ্ছে।

ফলে যারা স্বভাবতঃ শেয়াল প্রকৃতির, যেমন অধিকাংশ রাজনীতিক, অর্থাৎ যারা আইনব্যবস্থার ফাঁকফোকর গলে নিজেদের অন্যায্য অংশও এতকাল বুঝে নিয়েছে, তারা বর্তমানের কলসী ব্যবস্থায় পড়েছে মহা ফ্যাসাদে। তাদের সমস্যা দ্বিমুখী। ১. যদি কলসী ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে  যায়, তাহলে তাদের ন্যায্য প্রাপ্যটুকুতেই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে যা কিনা পরিমানে তাদের এতকালের পেয়ে আসা অন্যায্য অংশ অপেক্ষা অনেক কম। অর্থাৎ এখন থেকে তাদের সম্পদ যাবে কমে। ২. আজকের কলসী ব্যবস্থায় তাদের ন্যায্য প্রাপ্তি কমবার সঙ্গে সঙ্গেই প্রমাণিত হয়ে যাবে যে এতকাল তারা অসৎ উপায়ে দেশের সম্পদ আহরণ করেছে, অর্থাৎ চুরি করেছে। ফলে এই শেয়ালেরা এখন একযোগে হুক্কাহুয়া শুরু করেছে প্রধান সারসটিকে দায়িত্ব থেকে সরানোর জন্য। তারা পুরোনো চ্যাপটা থালা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে চায় দেশের সকল শেয়ালকুলের সুবিধার জন্য। আগে তো সব শেয়ালেরা বাঁচুক, তার পর না হয় নিজেদের ভিতরকার খেয়োখেয়ি আবার শুরু করা যাবে। কোন্ শেয়াল বেশি পেল আর কোন্ শেয়াল দু'আনা কম, তা নিয়ে ঝগড়া না হয় পরেও করা যাবে। কিন্তু সারসের কলসী ব্যবস্থায় তো শেয়ালদের শুধু খাবারের গন্ধ শুঁকেই কাটাতে হবে! খাবার আর জুটবে না বা জুটলেও জুটবে নামেমাত্র। এ হতে দেওয়া যায় না। তাই সব শেয়াল নিজেদের সমস্ত অন্তর্দ্বন্দ্ব ভুলে এককাট্টা হয়েছে। তুলেছে এক রা। মুখিয়া সারস হঠাও, হম সবকো বচাও।

আর দেশের সাধারণ মানুষও, অর্থাৎ যাদের মধ্যে শেয়াল ও সারস উভয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই বর্তমান, এতকাল চ্যাপটা থালার মত flat আইনব্যবস্থাতেই অভ্যস্ত ছিল। ফলে তাদেরও অনেকেরই অভ্যেস হয়ে গিয়েছিল lucid আইনের সুবিধা নিয়ে বা তার অপপ্রয়োগ করে অন্যায্য প্রাপ্তি আদায় করার, তা সে বাস্তবে তাদের ন্যায্য অধিকারের থেকে যতই কম হোক না কেন। রাজার ছেলে নিজের ঘরে চুরি করে চুরির বাহাদুরিতেই সন্তুষ্ট ছিল। তাদেরও অভ্যেস ছিল না সমস্ত আটঘাট বেঁধে সারসের কলসীর মতো একটা formatted, organized আইনব্যবস্থার সাথে মানিয়ে চলার। কলসীর মুখটা খুঁজে নেওয়ার বা ঠিক কোন্ অ্যাঙ্গলে নিজের ঋজু ঠোঁট সেই সরু কলসীর মুখ দিয়ে ভেতরে ঢোকানো যায় তা বুঝে নেওয়ার কোনো দায় তাদের এতকাল ছিল না। না বুঝে, না জেনেই তাদের দিব্যি চলে যাচ্ছিল চ্যাপটা থালা থেকে যৎসামান্য কুড়িয়ে বাড়িয়ে। কিন্তু নতুন কলসীব্যবস্থায় অসুবিধা হল এই যে, অবুঝ, অবোধ হয়ে থেকে যেখানে সেখানে ঠোক্কর মারতে গেলে খাবার তো জোটেই না, উল্টে কলসীর বাইরের দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে আঘাত পেতে হয়। তাই এদেরও অনেকেরই এই কলসী ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু তা হলেও, এদের মধ্যে অনেকেই এমন আছে যারা তা সত্ত্বেও নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে নিজেকে ঋজু চরিত্রের সারসের দলে include করতে চাইছে। কিন্তু এদের মধ্যে আবার এমনও অনেকে আছে যাদের অন্তর্নিহিত শেয়ালত্ব প্রবল, তারা কিছুতেই মনে মনে কলসী ব্যবস্থাকে মানতে পারছে না। তারা মুখে নিজেদেরকে সারসদের দলভুক্ত বলে দাবী করলেও মনে মনে এরা শেয়াল, অর্থাৎ অসৎ। তাই এরাও প্রধান সারসের তীব্র বিরোধী। এরা যে কোনো ছুতোনাতায় প্রধান সারসকে অপদার্থ, অসফল ও মিথ্যেবাদী প্রচার করার প্রয়াস করে থাকে। কারণ এরা সারসদের দলে সারস হয়ে ভিড়ে থাকলেও আদতে এরা শেয়াল।

জনগণের মধ্যে আর একটি শ্রেণী আছে যারা চারিত্রিকভাবে শেয়াল নয়, সারসই। কিন্তু তাদের আত্মবিশ্বাস ও self-esteem প্রচণ্ড কম। ফলে তারা প্রধান সারসের উপর মনে মনে বিশ্বাস রাখতে পারে না, কারণ প্রধান সারসও তাদের মতই এক সাধারণ পরিবারের সদস্য। তারা নিজেরা হতাশা, কমপ্লেক্স ও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভোগে বলে মনে করে প্রধান সারসের এই সব নীতি, কলসী ব্যবস্থা ইত্যাদি কোনো কাজে আসবে না। এগুলো সবই বৃথা যাবে। তা যদি না হত, তাহলে তো প্রধান সারসের নীতিতে এতদিনে সমস্ত শেয়ালেরা ধরা পড়ে যেত! কই, তা তো পড়ল না!

এদের pessimism বুঝতে চায় না যে সব শেয়ালকে ধরে গারদে পোরা শুধু কঠিনই নয়, বস্তুতঃ অসম্ভব। কারণ কিছু না কিছু শেয়ালত্ব অধিকাংশের মধ্যেই বর্তমান। বরং সবাই মিলে এককাট্টা হয়ে প্রধান সারসের কলসীনীতির সপক্ষে দাঁড়ালে সত্যিই একদিন দেশের পক্ষে সম্ভব হবে শেয়ালদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া। কিন্তু তার জন্য ততদিন ধৈর্য ধরে নিজেদের আত্মবিশ্বাসকে বজায় রাখতে হবে এবং কলসীব্যবস্থার সাথে আগে নিজেদেরকে মানিয়ে নিতে হবে যতদিন পর্যন্ত না সব প্রকৃত শেয়াল হয় মারা পড়ে অথবা প্রাণের তাগিদে দেশান্তরী হয় এবং সব আংশিক শেয়ালত্বসম্পন্ন জনগণ নিছক বাঁচার তাগিদে তাদের শেয়ালত্ব বিসর্জন দিয়ে সারসত্ব গ্রহন করতে বাধ্য হয়।

তাই মনে মনে আজ সব সারসদেরই বলতে হবে "মনে আছে বিশ্বাস, পুরো আছে বিশ্বাস, আমরা করব জয়, নিশ্চয়"। আর এতক্ষণে নিশ্চয় বুঝে ফেলেছেন প্রধান সারসটি কে? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। প্রধান সারস হল প্রধান সেবক, শ্রী নরেন্দ্র মোদী, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

Comments

Popular posts from this blog

রথযাত্রা: কুমুদরঞ্জন মল্লিক

Karnataka Election Result 2023: Observations

এত প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে শিল্প-খরা: কেন?