শবরীমালা: বিতর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর


মন্দিরে মানুষ যায় কেন?

মন্দিরে অধিষ্ঠিত দেবতাকে ভালোবেসে, তাঁকে পূজা নিবেদন করতে!

পূজা কাকে নিবেদন করে?

যে দেবতার প্রতি বিশ্বাস আছে, যে দেবতার মূলভাবের প্রতি সমর্পণ আছে, তাঁকে।

শবরীমালা আয়াপ্পার মূলভাবটি কি?

ব্রহ্মচর্য, সংযম, কামিনী নারীর সংস্পর্শ পরিহার করে চলা।

তাহলে reproductive age এর যে নারী লর্ড আয়াপ্পার এই ভাবটিকে সম্মান করেন, তিনি কি আয়াপ্পার প্রতি ভক্তি নিবেদন করতে তাঁর মন্দিরে ঢুকবেন? নাকি আয়াপ্পাকে ভালোবাসেন বলেই মন্দিরে ঢোকা থেকে বিরত থাকবেন?

অবশ্যই দ্বিতীয়টা করবেন। কারণ যে নারী আয়াপ্পাকে ভক্তি করেন, তিনি তাঁর বিশ্বাসের জায়গা থেকেই শবরীমালা মন্দিরে হাজির হয়ে আয়াপ্পাকে বিরক্ত করতে চাইবেন না। শবরীমালায় তাঁর অনুপস্থিতিই তাঁর পূজা, আয়াপ্পার প্রতি তাঁর ভক্তির  প্রদর্শন। 

তাহলে এ থেকে কি প্রমাণিত হয়?

প্রমাণিত হয় যে শবরীমালায় ঢুকতে চাইবে সেই মেয়েরাই, মন্দিরের দেবতার উপর যাদের আদৌ কোনো বিশ্বাস, ভক্তি বা সমর্পণ নেই।

অর্থাৎ যারা আদৌ আয়াপ্পার ভক্তই নয়, তারা।

তাহলে অভক্ত নারীর শবরীমালায় ঢোকার জন্য দড়িছেঁড়া হয়ে ওঠার কি প্রয়োজন?

প্রয়োজন সম্ভবতঃ নিশ্চিতভাবেই রাজনৈতিক। মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে বিচার করা থেকে বিরত থাকলেই বোধ হয় ভালো হত। যদিও এর ফলে কেরালায় আয়াপ্পার প্রকৃত ভক্ত হিন্দু নারীদের বিশাল অন্তর্জাগরণ ঘটেছে। জাতীয়তাবিরোধী কম্যুনিস্ট সরকারের আসন নড়বড় করতে শুরু করেছে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টকে ধন্যবাদ। এমন একটি ভার্ডিক্ট না দিলে এই ঐতিহাসিক জনজাগরণের সাক্ষী হতে আমরা পারতাম না। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরেই লর্ড আয়াপ্পার আদালত সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

এই প্রসঙ্গে সিউডো-ফেমিনিস্টদের অনেক প্রশ্ন আছে। যেমন,

১. menstruation একটা natural phenomenon. মেয়েরা কি তখন অপবিত্র নাকি? তাহলে কেন মন্দিরে ঢুকতে পারবে না?
অপবিত্র? ঋতুমতী মহিলাকে অপবিত্র বলে এমন সাধ্য কার? একান্ন সতীপিঠের অন্যতম কামাখ্যাপীঠে অম্বুবাচীর সময় দেবীর রজঃস্বলা অবস্থায় মন্দির বন্ধ থাকে। সেই পরম পবিত্র রক্তবস্ত্র পরমা প্রকৃতির অসীম শক্তির আধার। ভক্তবৃন্দ সেই রক্তবস্ত্র নিজ সংগ্রহে রাখে পরম আদরে সৌভাগ্যচিহ্নরূপে। হিন্দুধর্মে তো নারীর ঋতুমতী রূপকেও পূজা করা হয়।

আবার ব্রহ্মচারী আয়াপ্পারও পূজা করা হয়। সমাজ গঠনে সবই প্রয়োজন। কোনো বিরোধ নেই।

নারীর কামিনী-রূপ সৃষ্টির আধার। ভারতবর্ষ যখন সমৃদ্ধশালী ছিল, তখন সেই রূপের প্রকৃত তাৎপর্যকে সম্মানের সঙ্গে celebrate করার যোগ্যতা আমাদের ছিল। আজ আমরা পিছিয়ে পড়েছি। অপরিণতবুদ্ধি আজ আমরা। তাই নারীর সকলরূপকে সমদৃষ্টিতে দেখার গ্রুমিং আজ আমাদের নেই। কিন্তু সবই পরম সত্য। বিরোধ নেই। celibate god এর celibacy কে অসম্মান করব কেন? সে শিক্ষার প্রয়োজন, অনুভূতি ও গ্রুমিং আমাদের আজও আছে।

২. মেয়েরা ঢুকলেই আয়াপ্পার ব্রহ্মচর্য নষ্ট হবে? আয়াপ্পা কি এতই দুর্বল?



আয়াপ্পা দুর্বল কি দুর্বল নন, এ প্রশ্ন ওঠে না। হিন্দুধর্মে দেবতা রূপকল্প। আয়াপ্পা ব্রহ্মচারী। এর অর্থ হল, তিনি ব্রহ্মচর্যের প্রতীক। একটি মানুষের গোটা জীবনজুড়ে মানুষটি এগিয়ে যায় নানা ধাপের মধ্য দিয়ে। তার শৈশব, ব্রহ্মচর্য, গার্হ্যস্থ ইত্যাদি নানা ধাপে সেই মানুষটি প্রকৃতপক্ষে অনেকগুলি আলাদা আলাদা মানুষ। তাতে বালগোপালের মত আদরণীয় শিশু যেমন আছে, আয়াপ্পার মত ব্রহ্মচারীও আছেন, নারায়ণের মত গৃহীও আছেন, আবার দূর্গার মত শক্তিরূপিনীও আছেন। সেই কারণেই দেবতার এত রূপকল্প। প্রতি রূপকল্প আসলে একই মানুষের জীবন, বোধ ও ভাবের নানা রূপ। আয়াপ্পার পুজো প্রকৃতপক্ষে ব্রহ্মচর্যের পুজো। মনুষ্য চরিত্রগঠনে ব্রহ্মচর্যের ভূমিকা অপরিসীম। তাই ব্রহ্মচর্যের সেই স্পিরিটের প্রতি ভক্তি ও সমর্পণ যে নারীর আছে, সেই নারীই আয়াপ্পার ভক্ত। আর ভক্ত নারী সদা ultra-cautious থাকেন যে নিতান্ত অনিচ্ছাকৃতভাবেও যেন তাঁর দ্বারা আয়াপ্পার ব্রহ্মচর্য ব্রতের অবমাননা না হয়। এ তাঁর বিচার্য। আয়াপ্পার নয়। আয়াপ্পা দুর্বল কি দুর্বল নন, এ প্রশ্ন যাঁরা তোলেন, তাঁরা আর যাই হোন, ব্রহ্মচর্যের পূজার মূলভাবের পূজারী নন। প্রকৃত ভক্ত কদাপি ভগবানের পূজার মূলভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না। তাই যাঁরা ভক্তই নন, তাঁদের মন্দিরে প্রবেশ করার প্রয়োজনই বা কি?

তাছাড়া আয়াপ্পার ব্রহ্মচর্যকে সম্মান দেখিয়ে নিজে থেকেই তাঁকে দর্শন করতে না যাওয়ার কর্তব্য ভক্ত নারীর। এ বিশ্বাস ভক্তের। আর ধর্মাচরণের ভিত্তিই হল বিশ্বাস। সুতরাং ভক্তকে তার বিশ্বাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য জোর করা যায় কি? সে-ও কি সংবিধানের ২১ নং ধারার উল্লঙ্ঘন নয়?

সংবিধানের ২১ নং ধারা কি বলে?

Protection of life and personal liberty: No person shall be deprived of his life or personal liberty except according to procedure established by law. অর্থাৎ কোনো মানুষকে তার স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। কিন্তু একজনের স্বাধীনতা যদি আর একজনের স্বাধীনতার পরিপন্থী হয়ে ওঠে? যেমন এক্ষেত্রে হয়ে উঠছে? প্রতিবাদীর স্বাধীনতা রক্ষা করতে গিয়ে ভক্তের স্বাধীনতা ও বিশ্বাসকে যে অন্যায়ভাবে আঘাত করা হচ্ছে? সে-ও কি উচিত?

আরও আছে। সংবিধানের ২৫ নং ধারা অনুযায়ী প্রতিটি মানুষের নিজ ধর্ম বিশ্বাস বজায় রাখার ও ধর্ম পালন করার অধিকার ও স্বাধীনতা আছে। শবরীমালার ভক্তদেরও তা আছে। এবং এক্ষেত্রে ধর্ম পালনের অন্যতম pre-requisite টিই হল reproductive age এর মহিলারা আয়াপ্পাকে দর্শন করবেন না। সুতরাং সেই মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দিয়ে দেওয়ার অর্থ হল শবরীমালা আয়াপ্পার ভক্তদের কাছ থেকে নির্বিঘ্নে এবং অবাধে তাঁদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া। পরোক্ষে সে-ও সংবিধান অবমাননাই।

আর যাঁদেরকে ঢোকার অধিকার জোর করে পাইয়ে দেওয়া হল, তাঁরা যদি আয়াপ্পার মন্দিরে ঢোকেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দিক থেকে এই বিশেষ দেবতাটির প্রতি ভক্তি ও সমর্পণের অভাব ঘটল।

Please kindly note reproductive age এর যে সমস্ত মহিলারা আয়াপ্পার দর্শন করতে চাইবেন, তাঁরা তৎক্ষণাৎ প্রমাণ করবেন যে তাঁরা আর যা-ই হোন, আয়াপ্পার ভক্ত নন। কারণ ভক্তিপ্রকাশের উপায় এখানে উল্টো, X axis এর উল্টোদিকে। এক্ষেত্রে আয়াপ্পার দর্শনের জন্য সঠিক বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়ার অপেক্ষা করাই তাঁর যথার্থ পূজা। The more dedicated you are to Lord Ayappa, the more restrained you'd be. দেবতার প্রতি ভক্তি নিবেদন করতে গেলে সবসময়ই যে তাঁর কাছে গিয়ে হামলে পড়তে হবে, তার কি অর্থ আছে? ব্রহ্মচর্য ও সংযমের দেবতার কাছে পৌঁছতে গেলে ঋতুমতী নারীকে সেই সংযম বজায় রাখতে হবে বৈ কি! আয়াপ্পার কাছে পৌঁছনোর ভক্তিমার্গ সেটিই।


৩. তা বলে সেই সংযমের দায় শুধু মেয়েদের কেন? ছেলেদের কেন নেই?

ছেলেদেরও আছে। শবরীমালা মন্দিরে ঢোকার আগে ৪১ দিনের একটি পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে ভক্তকে pass করতে হয়, যখন নারী, পুরুষ নির্বিশেষে তাদেরকে কঠোর সংযম অভ্যাস করতে হয়। Reproductive age এর মহিলাদের ঋতুকালে প্রাকৃতিক নিয়মেই তাদের বেশ কিছু সময় ব্যয় করতে হয় নিজের ঋতুকালীন যত্ন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। সেই সময় সেই সংযম অভ্যাস করায় সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করা তার নিজের পক্ষেই চাইলেও সম্ভব না। সুতরাং নারীর ক্ষেত্রে এইভাবে সঠিক বয়প্রাপ্তঃ হওয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। প্রকৃতির নিয়মেই।

এই বিধিনিষেধ, এই সংযমই আয়াপ্পার পূজার অন্যতম বিধি। সুতরাং সেই মৌলিক পূজাবিধিকেই চ্যালেঞ্জ করলে আর যা-ই হোক্, আয়াপ্পার পূজা করা হয় না। আর যারা পূজা করার ছুতোয় কেবল চ্যালেঞ্জ ঠোকাঠুকি করতে চায়, তাদের আবার ধর্মচর্চার অধিকার কি? তারা নিতান্ত বকধার্মিক বললে ভুল হয় কি?

৪. তা বলে কোনো মন্দিরে কারুরই বা ঢোকা বারণ হবে কেন? এটা কি gender discrimination against women নয়?

না নয়। বহু হিন্দু মন্দিরে পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই। শুধুমাত্র মহিলারাই সেই সব মন্দিরগুলিতে পূজা করতে পারেন। সেটি যদি gender discrimination against men না হয়, তবে শবরীমালায় reproductive age এর মহিলাদের ঢুকতে না দেওয়াও gender discrimination against women নয়।


অনেক মেনস্ হস্টেলে মেয়েদের ঢোকার অনুমতি থাকে না। সেটা কি gender discrimination? না। আমাদের সমাজজীবনেও মানুষের সাথে মানুষের প্রতিটি সম্পর্ক বাঁধা থাকে কিছু অনুশাসনের নিগড়ে। কিছু সম্পর্ক নিষিদ্ধ সম্পর্ক বলে সংজ্ঞায়িত। নারী পুরুষকে প্রলুব্ধ করার ক্ষমতা রাখে। সে প্রকৃতি। সে তার পরম আবেদন। কিন্তু সমাজধর্ম অনুযায়ী নারীকেও নিষিদ্ধ সম্পর্কগুলিতে পুরুষকে প্রলুব্ধ করা থেকে বিরত থাকার শিক্ষাই দেওয়া হয়। আয়াপ্পা প্রতীক মাত্র। ভক্ত নারী হয়ত সচেতনভাবে ব্রহ্মচারী দেবতাকে প্রলুব্ধ করবেন না। কিন্তু নিজের অজান্তেও যেন দেবতার অবিচলিত ব্রহ্মচর্য ভাবের কোনো বিচলনের কারণ তিনি না হয়ে পড়েন, সে বিষয়ে তাঁর নিজের অতি সতর্ক থাকারই কথা।  সেই আমাদের সমাজধর্ম, জীবনবোধ। এ পূজা ব্রহ্মচর্যভাবের প্রতি সমর্পণেরই পূজা। তাই এর মধ্যে gender discrimination এর মত নিতান্ত সামান্য বিষয় খুঁজে বের করা কষ্টকল্পনামাত্র।



৫. তাহলে Equality of All এর কি হবে? code of conduct কি সবার জন্য একই হওয়া উচিত নয়?

অবশ্যই উচিত। এবং পুরো সিস্টেমকে একত্রে, in totality consider করলে দেখা যাবে, Equality of All ও Uniform code of conduct for All বিঘ্নিত হচ্ছে না কোত্থাও। কোথাও reproductive age এর নারীর প্রবেশাধিকার নেই, তো কোথাও পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই। গোটাটা মিলিয়ে নিরপেক্ষতা এবং সমানাধিকার বজায় থাকছে।

যদি এমন হত যে কোনো মন্দিরেই হয় নারীর, নয়ত বা পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই, উপাসনার অধিকারও নেই, তবে তা হত Equality of All ও Uniform code of conduct for All এর উল্লঙ্ঘন। যেমন মসজিদগুলোতে সাধারণভাবে মুসলমান নারীর উপাসনার অধিকার নেই বলেই জানি। কিন্তু পুরুষের অধিকার সর্বত্র অবাধ। সেইটি gender discrimination.

হিন্দুধর্মে gender discrimination originally নেই, কোনোদিন ছিল না। gender discrimination পরবর্তীকালে creep in করেছিল অবশ্যই। কিন্তু সে আলোচনা অন্য।

তাই শবরীমালা নিয়ে অকারণে gender discrimination এর ভূত কবলানোর কোনো মানে হয় না।

যে সব মন্দিরে পুরুষের প্রবেশাধিকার নেই, সে সব মন্দিরে পুরুষের বিরুদ্ধে gender discrimination হচ্ছে এমন অভিযোগ না উঠে যদি শবরীমালাকে উপলক্ষ্য করে কেবলমাত্র নারীর বিরুদ্ধে gender discrimination হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে, তবে সে-ও নারীকে অবহেলিত প্রতিপন্ন করে তাকে জোর করে কিছু পাইয়ে দেওয়ার প্রয়াস। এবং আমার মতে সে-ও নারীর বিরুদ্ধে আর এক ধরণের gender discrimination ই. বলা যেতে পারে positive gender discrimination towards women. But shouldn't we get rid of all sorts of gender discrimination either positive or negative? নারীকে জোর করে অন্যায্যভাবে কিছু পাইয়ে দিলে,আর কেউ অপমানিত বোধ করুক আর না করুক, নারীবাদীদের অন্ততঃ আঁতে ঘা লাগা উচিত। তা যদি না লাগে, তবে বুঝতে হবে সে প্রকৃত নারীবাদ নয়, বরং ছদ্ম-নারীবাদ / সিউডো-ফেমিনিজম্। ছদ্ম-নারীবাদের মুখোশের আড়ালে সে আসলে বোধ করি ক্ষমতাতান্ত্রিক রাজনীতির আর এক হাতিয়ার।

শবরীমালায় আসলে কোনো gender discrimination নেই। বরং নারীর কামিনী রূপের প্রতি admittance & indirect recognition আছে। আয়াপ্পা বিভ্রান্ত না হলেও তাঁর বিভ্রান্তির কোনো কারণই যেন না ঘটে সে বিষয়ে তাঁর ভক্তবৃন্দ সদা সচেষ্ট।

এই সংযমই আয়াপ্পার প্রতি ভক্তি ও সমর্পণ নিবেদনের মূল সুর।

হিন্দু ধর্ম নানা রূপকল্পে দেবতারূপে আপন অন্তর্নিহিত শক্তির পূজা করে। প্রতিটি রূপকল্পের দ্যোতনা পৃথক। প্রতিটিরই গুরুত্ব সমান। কারণ প্রতি দেবতার রূপকল্পের সঠিক অনুধাবনেই মানুষের চরিত্রগঠন সম্পূর্ণ হয়। শত প্রলোভনের মাঝে অবস্থান করেও প্রলোভনকে জয় করার শিক্ষা যেমন জরুরী, তেমন প্রলুব্ধ করার প্রয়াস না করার শিক্ষাও জরুরী। নারীর কামিনী রূপ পুরুষকে প্রলুব্ধ করতে পারে এবং কখনও কখনও তা নারী ও পুরুষ উভয়ের পক্ষেই অমঙ্গলজনক হতে পারে, এই চিরন্তন সত্যটি নারী বা পুরুষ কারুর পক্ষেই অবমাননাকর নয়, বরং সৃষ্টির পরম সত্য। সেই সংযমও শিক্ষনীয়। আয়াপ্পা দর্শনের age bar for ladies তাই নারীর পক্ষে অবমাননাকর নয় আদৌ। তাই gender discrimination, gender discrimination করে মুখে ফেনা তুলে ফেলার কিছু নেই ছদ্ম-নারীবাদীদের। 

শোনা যাচ্ছে রেহানা ফতিমা নামক এক মহিলা নাকি শবরীমালা মন্দিরে ঢুকে মন্দিরস্থিত দেবতার অপমান করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ঋতুস্রাবের কাপড় দেবতার দিকে ছুঁড়ে দিয়। ঠিক যেভাবে পুজোর সময় কিছু লোক মূর্তি ভাঙ্গে, সেইভাবে। তাহলে? এই ধরণের ঘটনাকে prevent করতে চাওয়া কি আয়াপ্পার ভক্তদের পক্ষে স্বাভাবিক নয়? সেই কারণেই পথে নেমেছেন তাঁরা। আয়াপ্পা স্বয়ং তাঁদের শক্তির উৎস।

মোটের উপর মেয়েরা সঠিক সময়ের আগে শবরীমালায় ঢুকবে না। হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি নিয়ে অনাচার করা যাবে না। হিন্দু মন্দিরের সম্পদকে কব্জা করার সন্দেহজনক প্রয়াসও কেরলের কম্যুনিস্ট সরকারকে ত্যাগ করতে হবে।

 

Comments

Popular posts from this blog

রথযাত্রা: কুমুদরঞ্জন মল্লিক

নব্য কথামালা: শেয়াল ও সারসের গল্প

এত প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে শিল্প-খরা: কেন?

West Bengal: A Security Threat to India