দীপাবলী, শব্দবাজি, শহুরে বাঙালী ও পোষ্য কুকুরের কড়চা
সেটিও ছিল কালিপুজোর কুচকুচে কালো রাত। আকাশের গায়ে বাজির ঝলকানি আর পটকার আওয়াজ নিরন্তর— কি ভাবছেন? কোনো সাহিত্যকর্ম শুরু করতে চলেছি? আদৌ নয়। যা করতে চলেছি, সাদা বাংলায় তাকে বলে ঝগড়া। অথবা ভদ্রভাবে বলা যেতে পারে বিতর্ক। তা সে ঝগড়াই হোক বা বিতর্ক, কালিপুজোর রাতে এই নিরন্তর পটকা ফাটার আওয়াজটা আমাদের থেকে কেড়ে নিতে চাইছে একদল লোক। প্রথমে তারা বলেছিল দীপাবলীতে বাজি পোড়ানো নাকি ভারতীয়দের শিখিয়েছে মুঘলরা। তারপর নিজেদের কানেই হয়ত বিষয়টা কিঞ্চিৎ বিসদৃশ ঠেকায় আরও বেশ খানিক পিছিয়ে গিয়ে প্রথম বাজি তৈরি করার কৃতিত্বটি তারা দেয় চৈনিকদের। বলে, সল্টপিটার/সল্পপেট্রে (অর্থাৎ সোরা, নাইটার জাতীয় সল্ট) নাকি প্রথম তৈরি হয়েছিল চীনে। অতএব আধুনিক আতসবাজির জনকও চীনই। ভারতে আতসবাজির চল কোনোদিন ছিল না এবং বাজি পোড়ানো হিন্দুদের কোনো রিলিজিয়নের অঙ্গও নয়। কোথায় লেখা আছে বাপু? কোন্ বইয়ে? দেখাও দেখি! বলেছিল তারা। কিন্তু হিন্দু ধর্ম কি কোনো একখানি বই মেনে চলে! আমাদের সমস্ত কৃষ্টির কথা কি কোনো একখানি বইয়ে লেখা আছে?
তবে এসবের ফলে একদিক থেকে হয়েছে ভালোই। নিজেদের রিলিজিয়ন ও সংস্কৃতির দিকে ঘুরে তাকানোর সুযোগ মিলছে।
কথা হল গিয়ে দীপাবলীতে বাজি পোড়ানো যেমন একটি সংস্কৃতি, তেমনি এটি একটি রিলিজিয়াস ক্রিয়াকলাপও বটে। যথা উল্কাদান। “উল্কাহস্তা নরাঃ কু্র্যুঃ পিতৃণাং মার্গদর্শনম্”। তাছাড়া শাস্ত্রসম্মত আচরণবিধি হিসেবে লেখা আছে, “দীপান্বিতাতে পার্বণশ্রাদ্ধ করিয়া উল্কাদান করিবে। এই উদ্ধারনে পিতৃলোকের পথদর্শন হয়”। উল্কাদানের মন্ত্র যথা-“ওঁ শস্ত্রাশস্ত্রহস্তানাঞ্চ ভূতানাং ভূতদশয়েঃ। উজ্জলজ্যোতিষা দেহং দহেয়ং ব্যোমবহিনা। অগ্নিদগ্ধাশ্চ যে জীবা যোহপাদন্ধাঃ কুলে মম। উজ্জ্বলজ্যোতিষা দগ্ধান্তে যান্ত পরমাং গতিম্। যমলোকং পরিতাজ্য আগতা যে মহালয়ে। উজ্জ্বলজ্যোতিযা বত্ন প্রপশ্যন্তো ব্রজন্ত তে”। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা উচিত যে এই সকল মন্ত্রোচ্চারণের বিষয়ে বিন্দুমাত্র শিক্ষাদীক্ষা আমার নেই ফলে এইসব বলার জন্য আমি নিতান্ত অনধিকারী। তবু সমাজজীবনে বেঁচে থাকার তাগিদে এমন অনধিকার চর্চা করতে হচ্ছে, তার জন্য ঈশ্বরের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। উল্কাদানের উল্লেখ আছে স্কন্দপুরাণে।
শ্রী আভাস মালডাহিয়ার একটি আর্টিকলে লিখেছেন— “According to the translation of GV Tagare , Ulka is “firebrand.” There are various authorities in translations who mention Ulka as Firebrand, Torch, Meteor, Fire falling from sky. One of the best authorities on interpretation, Vachaspatyam, mentions Ulka as शुष्कतृणवस्त्रादिदीपिते (मशाल) इति प्रसिद्धे दीपभेदे which is “a kind of ‘dīpa’/lamp/flame (दीपभेद), known as मशाल (मशाल इति प्रसिद्धे), which is lighted (दीपित) using dry grass (शुष्कतृण), cloth (वस्त्र), etc (आदि).” The very well-known Indologist and Sanskrit expert of the early twentieth century V Raghavan has also explained it very well in his book Festivals, Sports and Pastimes Of India (page 162-170) that Ulkadan was done to the show the path to the ancestors (pitr) who have arrived during the Mahalaya. The Ulka-Dan has been explained by him to be the firecrackers. Raghavan mentions that although the firecrackers exploded in mid-air are intended to show the path to the ancestors,…”
তাছাড়া, আনন্দ রামায়ণেও বর্ণিত রয়েছে অযোধ্যায় রামচন্দ্রের প্রত্যাবর্তনের সময় আলোর ঝলকানিতে আকাশকে সাজিয়ে তোলার কাহিনী। কারণ শ্রী রাম ফিরেছিলেন পুষ্পক বিমানে, আকাশপথে। তাই “গগনান্তরবিরাজিতম্”— তবে এই আনন্দ রামায়ণের চাইতেও প্রাচীন হল নবম শতাব্দীতে তৈরি তামিলনাড়ুর ত্যাগরাজ মন্দিরগাত্রের বেশ কিছু ম্যুরাল যাতে স্পষ্ট উৎকীর্ণ রয়েছে আতসবাজির ব্যবহার।
আভাস'জী লিখছেন— “It has been well established by Sanskrit scholars that Ulka meant a firebrand/ torch/ illumination in the sky. Hence, it clearly fulfils all functions of what a fuljhadi, rocket and other crackers of light do. Odisha observes the burning of Kaunriya (jute) Kathi which not only produced light but also the sound…The moment you add saltpetre to these firebrands, they will turn into a firecracker. Notion was very clear. As per the tradition mentioned in the Skanda Puran, one was supposed to show the path to the ancestors (pitr) by firebrands that also produced sound.”
এবার এতদূরই যখন হল, তখন সোরা, নাইটার আদি সল্ট যদি ভারতীয়দের কাছে থাকত তাহলে কি উল্কাদানের সামগ্রীতে তারা তা ব্যবহার করত না? তখন একদল লোক বলল, সোরা, নাইটার ভারতীয়রা পাবে কোথায়? এইসব তো সর্বপ্রথমে বানিয়েছে চীন! তাহলে চীনের আগে আতসবাজির ব্যবহার ভারত করবে কি করে?
কিন্তু বাস্তবে ভারত এবং চীন উভয় দেশের কাছেই ছিল সল্টপিটার/সল্পপেট্রে অর্থাৎ সোডিয়াম নাইট্রেট এবং পটাশিয়াম নাইট্রেট জাতীয় সল্ট এবং তাদের প্রস্তুতির বিজ্ঞান। আভাস মালডাহিয়ার লিখছেন— “The Arthashastra (a 4th century BC text) written by Chanakya talks about Agniyoga (inflammable powder & explosives, page 181, 576) while discussing warfare.” অর্থাৎ মৌর্য যুগে যুদ্ধে ব্যবহার্য এক্সপ্লোসিভ মেটিরিয়াল ভারতের কাছে ছিল। শুধুমাত্র খ্রীষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকের অর্থশাস্ত্রে নয়, সল্ট পিটারের বা সল্পপেট্রের উল্লেখ আছে আরও প্রাচীন খ্রীষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকের তামিল রচনাতেও। আভাস’জী উল্লেখ করেছেন, “We have an older Tamil Text (6th century BC) Bogar Ezhayiram (7,000 verses of Bogar), written by Boganathar. The verse 419, in the second set of 1,000 verses (of overall 7,000 verses), Boganathar mentions ingredients used for making distillations required for crafting Sarakku Vaippu. Sarakku Vaippu together indicate a specific type of compound created by the mixing of chemicals. Boganathar has emphasized the use of Saltpetre solutions for these. He refers to Saltpetre as white Vediuppu (i.e., Explosive salt). Vedi means explosion and Uppu means salt. In the verses 415-418, he has dealt with the method of preparation of the Saltpetre solution, Vediuppu Cheyaneer for all types of Sarakku Vaippu, of which fireworks include rocket powder, gunpowder etc., as types. শুধু তাই নয়, বোগান্তর উল্লেখ করেন কপার সালফেটের (Thurisu) নীলচে সবুজ রঙের ক্রিস্টালের ব্যবহারের কথাও, তাছাড়া বলেন কার্বনযুক্ত ব্ল্যাক সল্ট ও রক সল্টের অর্থাৎ সৈন্ধব লবণের ব্যবহারের কথাও। অর্থাৎ সোরা, গন্ধক ও কার্বন— এই তিন বস্তুই যীশু খ্রীষ্টের জন্মের ছ'শো বছর আগে ভারতবর্ষে ছিল। অথচ আতসবাজি ছিল না? একি স্বাভাবিক? বরং এ থেকে আন্দাজ করা যায় যে কেন আতসবাজির বিরাট কর্মকাণ্ড মাদ্রাজেই (শিবকাশী) গড়ে উঠেছিল। কারণ আতসবাজির বিজ্ঞান ছিল প্রাচীন তামিলনাড়ুতে।
উপরন্তু, বোগান্তর রচিত 414 নং পদে বিষ্ফোরক বানানোর যে পদ্ধতির কথা বোগান্তর বলেছেন, বৃটিশ ভারতেও সল্টপিটার বা সল্পপেট্রে সিন্থেসিস হত ঠিক সেই একই পদ্ধতিতে। প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে এইটি জানা গেল কিভাবে? দ্য ইমপেরিয়াল গেজেট অফ ইন্ডিয়া, ভল্যুম 3, পৃষ্ঠা সংখ্যা 153 ও তার পরবর্তী অংশে স্যর জর্জ ওয়াটের বর্ণনায় যে পদ্ধতিতে বিহারে এবং ভারতের অন্যান্য অংশে সল্পপেট্রের সিন্থেসিস হত বলে লেখা হয়েছে, সেই পদ্ধতি আর বোগান্তরের লেখা পদ্ধতি ছিল হুবহু এক। স্যর জর্জ ওয়াট ছিলেন একজন রিপোর্টার অন ইকোনমিক বটানি এবং যতদিন ভারতে থেকে কাজ করেছেন, ততদিনে 'দ্য ডিকশনারি অফ ইকোনমিক প্রডাক্টস্ অফ ইন্ডিয়া' বলে একটি মাল্টিভল্যুম কম্পাইলেশন ওয়ার্ক করেন যার একটি সংক্ষিপ্ত সিঙ্গল ভল্যুম ভার্সন প্রকাশিত হয় 1908 সালে যার নাম 'কমার্শিয়াল প্রডাক্টস্ অফ ইন্ডিয়া”। তাতে স্যর জর্জ ওয়াট লিখেছেন, “The term saltpetre (…) found in (…) chiefly South America, Spain, Persia, Hungary and India.” তিনি চীনের উল্লেখ করেন নি। আভাস মালডাহিয়ার তাঁর আর্টিকলে লিখেছেন, “He makes no mention of China. The records show that Europeans had begun to manufacture Saltpetre only in India despite close ties with China. India continued to be the prime manufacturer of saltpetre. The record confirms that in 19th century, the United Kingdom, followed by the US and China were the largest importers of saltpetre from India. This is quite interesting to note as per the British records that the exports of Saltpetre from India touched its zenith valuing to more than 650,000 pounds during the American Civil Wars (1800-1860s). The record clearly shows that India held the monopoly for supply of saltpetre in that era.” অর্থাৎ ভারতই ছিল সোডিয়াম নাইট্রেট, পটাসিয়াম নাইট্রেট জাতীয় বিষ্ফোরকের একচেটিয়া সাপ্লায়ার টু দ্য ওয়েস্ট। এবং বৃটিশ রেকর্ডে চীনের উল্লেখ নেই যদিও তাদের নিরবচ্ছিন্ন ব্যবসায়িক সম্পর্ক চীনের সঙ্গেও ছিল। অর্থাৎ বহুকাল ধরেই সল্টপিটারের সিন্থেসিস এবং ব্যবহার ভারতবর্ষ জানত। অথচ উল্কাদানের সময়ে আতসবাজিতে সল্টপিটার ব্যবহার করত না? আর সল্টপিটার ব্যবহৃত হলে আতসবাজিতে শব্দ ও আলো দুই-ই হবে। আভাস মালডাহিয়ারের লেখায় এ-ও উল্লেখিত হয়েছে যে এমনকি চীনও তাদের দেশে সল্টপিটার আবিস্কারের পিছনে ভারতের অবদান ও প্রেরণার কথা স্বীকার করেছে।
অর্থাৎ ভারতে আতসবাজি ছিল না, সেগুলি প্রথম বানিয়েছিল চীন এবং সেখান থেকেই আসে ভারতে বা ভারতীয় রিলিজিয়াস ফাঙ্কশনে আতসবাজির কোনো ব্যবহার ছিল না— এইগুলি সবই আদতে যাকে বলে হাফ-কুকড্ স্টোরিজ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ধরনের প্রপাগান্ডার সঙ্গে আমরা ভারতীয়রা পরিচিত হয়ে পড়েছি। বর্তমানে এটুকু হয়ত আমরা জানি যে অনেক বিষয়েই আমরা আদতে প্রপাগান্ডার শিকার।
অর্থাৎ আতসবাজিও এদেশে ছিল এবং আতসবাজি পোড়ানোর রিলিজিয়নও আমাদের আছে। যাঁদের রিলিজিয়ন কথাটি পছন্দ নয়, তাঁদের জন্য রয়েছে আমাদের আতসবাজি জ্বালানোর প্রাচীন সংস্কৃতিটি। এই উপলক্ষে বাড়ির বাচ্চাদের কিছু বিপজ্জনক খেলনা নিয়ে খেলতে শেখানোর সুযোগ পাওয়া যায় যার মাধ্যমে বাচ্চাদেরকে সাবধানতা এবং মজা দুই-ই উপভোগ করার শিক্ষা দেওয়া যায়। উপরন্তু, হাউই, উড়ন তুবড়ি, চকলেট বোম, দোদমার মত বাজি কিশোর বয়স থেকে ফাটাতে শিখলে বাচ্চার মধ্যে সাহস ও ডাকাবুকো স্পিরিট জন্ম নেয় যা সঠিক পথে পরিচালিত হলে কিশোরকিশোরীর চরিত্র গঠনে সহায়ক হতে পারে।
এবার প্রশ্ন, আশপাশের পথকুকুরদের তথা গৃহপালিত পোষ্যদের কি হবে? তারা শব্দবাজির আওয়াজে খুব ভয় পায়। এই প্রসঙ্গেও আমি কোন বিশেষজ্ঞ নই, কিন্তু নিজের অভিজ্ঞতাটুকু বলতে পারি। কুকুর পোষার অভিজ্ঞতা ব্যক্তিগতভাবে আমার আছে। কিন্তু পোষ্য মারা গেলে মন এতই ভেঙ্গে যায় যে প্রথমটির পর পোষ্য নেওয়ার সাহস আর কোনোদিন করি নি। আমার শাশুড়ি মা অবশ্য একটার পর একটা কুকুর পুষেছেন তাঁর ছোটবেলা থেকেই এবং এ বিষয়ে ধারণা রাখেন যথেষ্ট। কুকুরেরা অত্যন্ত প্রখরবুদ্ধি ও সংবেদনশীল soul. আমরা যতটা বুঝতে পারি তার চেয়ে ঢের ঢের বেশি সংবেদনশীল তারা এবং মানুষের সব কথা বুঝতে পারে। তবে মজার কথা হল আমার পরিচিত এক বাড়ির পোষ্যটি মারাত্মক ভয় পেত গ্যাস সিলিন্ডারের আওয়াজে। গ্যাস সিলিন্ডারওয়ালা এলেই সে সোফার নীচে ঢুকে মাটির সাথে একেবারে চেপটে যেত প্যাতপ্যাতে নরম হয়ে যাওয়া চকলেটের মত। এটা ছিল তার peculiarity. তার মানে এই তো নয় যে সে বাড়ির লোকেরা গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। বরং প্রতি মাসে সিলিন্ডার আসত আর সেই কুকুর ভয়ে একেবারে কাবু।
আদতে কুকুরেরা শুনতে পায় একটা বিরাট ফ্রিকুয়েন্সি range এর শব্দ যা আমরা শুনতে পাই না। ওরা শুনতে পায় সাবসনিক লেভেলের ফ্রিকুয়েন্সিও। তাদেরকে ট্রেইন করলে তাই যে কোন ধরনের বিষ্ফোরণের নেচার পর্যন্ত তারা বুঝতে পারে। পুলিশ, মিলিটারিতে ডগ স্কোয়াডের গুরুত্ব ঠিক কতখানি সে সম্পর্কে আমাদের সিভিলিয়ানদের জ্ঞান যদিও অতি সীমিত, তবু এটুকু বোধ হয় সকলেই জানেন যে পুলিশ বা মিলিটারির কুকুরেরা ধামাকায় ভয় পায় না। তারা ধামাকার তদন্ত করে। তবে কিনা লোক্যাল কুকুরগুলো তো আর রোজ চকোলেট বোমের শব্দ শোনে না, তাই তারা অত জোর শব্দে অভ্যস্ত থাকে না। তবে আমার মনে হয় মালদা, মুর্শিদাবাদের যেসব অঞ্চলে বোমা বাঁধার কাজ নিয়মিত চলে এবং অ্যাক্সিডেন্টালি বোমা ফাটে যখন তখন, সেখানকার কুকুররা হয়ত সেসব ধামাকায় অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং আদৌ আর ভয় পায় না সেসব ব্যাপারে। ইনফ্যাক্ট, এ নিয়ে একটি তুলনামূলক স্টাডি করলে হয়ত দেখা যাবে যে স্থানীয় কুকুরদের আচরণ স্থানীয় পরিবেশের উপর অনেকখানিই নির্ভরশীল। অনেক কুকুরকে দেখা যায় চলন্ত মোটর গাড়ির পিছনে চেঁচিয়ে দৌড়তে। কেন তারা অমন করে তার যথাযথ কারণ কি আমরা জানি?
বলা হয় যমের দুয়ারের দুই প্রহরী হল দুই সারমেয়। শর্বরা ও শ্যামা। এগুলি আসলে দুইটি নক্ষত্রমণ্ডলী। আর নক্ষত্র যখন, তখন ক্রমাগত বিষ্ফোরণ তো নক্ষত্রের মধ্যে হতেই থাকে। ফলে কুকুর চকোলেট বোমে ভয় পায় একথা হয়ত সত্যি হয়ে উঠছে আমরা চকলেট বোম ফাটানো ছেড়ে দিচ্ছি বলেই। ওরা অভ্যস্ত থাকছে না বলে ভয় পেতে আরম্ভ করেছে। এতে ওদের কুকুরসত্তারও পূর্ণ বিকাশ হয়ত হচ্ছে না। বাজি ফাটানোর বিষয়টা ছোটবেলা থেকে চলছে যা নিয়ে এত কথা হতে কখনো শুনি নি। পাড়ার লালু, ভুলু কালুয়ারা were parts of the local natural ecosystem. তাদের বাদ দিয়েও কেউ কখনো ভাবে নি, তাদের নিয়ে আলাদাভাবে কনসার্নড হতেও কাউকে কোনোদিন দেখি নি। তবে আমার এক জেঠশ্বশুর অবশ্য মাইনের এক অংশ বরাদ্দ রাখতেন পথের কুকুর, বেড়াল, গোরুদের খাওয়ানোর জন্য। বেহালার ব্রাহ্মসমাজ রোডে তাঁর বাড়িতে এই প্রাণীদের অবাধ আনাগোনা লেগে থাকত। তা বলে বাজি ফাটানো কখনও বন্ধ হয়েছে বলে তো শুনিনি।
Comments
Post a Comment