পশ্চিমবঙ্গ: প্রশাসনিক রাজ্যদ্রোহ

West Bengal Administration: Conspiring to Destroy the State Taxation Infrastructure (in anticipation of a possible defeat in 2021 Assembly Election?)


ব্যক্তিগতভাবে আমি রাজনীতির গভর্ন্যান্স বিষয়টিতেই সবচেয়ে উৎসাহী। সত্যিকারের রাজনীতি বলতে আমি বুঝি পলিসি মেকিং। এমন পলিসি যা public friendly in totality, cause oriented এবং progressive. এমন পলিসি যা সবসময় ইমিডিয়েটলি পপুলার না-ও হতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে organic chain reaction এর মত বেশিরভাগ মানুষকে তার চারপাশের পরিস্থিতি সম্বন্ধে সচেতন করে তোলে। তাই আমার সামান্য ক্ষমতা দিয়ে আমি সবসময় চেষ্টা করি to keep myself updated about Governance & policy related issues & their implications in future. 


এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যপ্রশাসনের তরফ থেকে তলে তলে ঘটছে একটা সাংঘাতিক প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র against the people of West Bengal. একসঙ্গে নষ্ট করে দিতে চাওয়া হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও রাজস্বব্যবস্থাকে।  


হয়ত রাজ্যের উপরমহলের আমলারা CM কে বোঝাচ্ছেন যে ২০২১ এ মমতার পার্টি যদি পুনর্নির্বাচিত না-ই হয়, তাহলে রাজ্যকে অর্থনৈতিকভাবে সম্পূর্ণ দেউলিয়া করে দিয়ে যাওয়াই উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়া হবে। সেই জন্যই রাজ্যের রাজস্বআদায় এবং রাজস্বকাঠামোকে ধ্বংস করার ধূর্ত প্রচেষ্টা চলছে। এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থাই হল সেই ব্যবস্থা, যা সাধারণ মানুষের অন্যতম প্রধান প্রয়োজনের পরিষেবা। সে পরিষেবা ধ্বংস করতে পারলেও পরবর্তী সরকারের জন্য পরিস্থিতি আরও বেশ খানিকটা কঠিন হয়ে উঠবে।


এই বিষয়ে প্রথম লিখেছিলাম ২০ শে নভেম্বর যে রাজ্যের কর আদায় কমছে, করদপ্তরকে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা ঠিকভাবে GST comply করছে কিনা তা দেখা বারণ। জিনিসের দাম বাড়ছে! (টাইমলাইনেই আছে)


সন্দেহ প্রকাশ করেছিলাম যে আইন অনুযায়ী ২০২২ পর্যন্ত রাজ্যের যেকোনো পরিমান রাজস্ব ঘাটতি যেহেতু কেন্দ্রই পুষিয়ে দেবে, সুতরাং রাজ্য সরকার হয়ত জেনেবুঝেই রাজস্বক্ষতি আটকানোর কোনো প্রয়াস করছে না। 


FB তে এবং ব্লগেও লিখেছিলাম যে GST কে successful করতে হলে এবং GST র ফলে সাধারণ জিনিসপত্রের দাম কমাতে হলে করদপ্তরের enforcement wing would always have to remain highly focused. Both implementation & enforcement of GST must be thoroughly done to reap the benefit of GST for common men. 


গতকালের ABP লিখেছিল যে গত তিনমাস ধরেই রাজ্যের নিজস্ব GST অর্থাৎ SGST আদায় কমতে শুরু করেছে। গত বছরের corresponding period এর তুলনায় এ বছর অক্টোবরে ২৫০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। সেই জন্য নাকি সরকার নড়েচড়ে বসেছে এবং GST implementation & enforcement এ জোর দিতে চলেছে। 


ভেবেছিলাম সাধু উদ্যোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার বোধ হয় নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং রাজ্যের রাজস্ব আদায় ও পরিকাঠামো ধ্বসিয়ে না দিয়ে কর অফিসারদের দিয়ে GST enforcement এ জোর দিতে শুরু করেছে। 


কিন্তু বুঝলাম আমার ধারনা ভুল ছিল। সরকারের ঘুম ভাঙ্গে নি। GST enforcement এ জোর দেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেটা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একেবারে উপরমহলের অনুমতি ছাড়া এবং তাঁদের আপত্তি সত্ত্বেও। 


GST collection & enforcement এ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপরমহলের আপত্তি আছে। তাঁরা চান না যে পশ্চিমবঙ্গের কোষাগারে GST র সুপ্রভাব পড়ুক। সেই জন্যই তাঁরা করদপ্তরকে অকেজো করে দিতে চাইছেন। করদপ্তরের কর্তাদের হাস্যকর ভাবে বদলি করতে চাইছেন স্বাস্থ্যদপ্তরে যাতে কর ও স্বাস্থ্য দুই দপ্তরের ভারসাম্যই একসাথে নষ্ট হয়। স্বাস্থ্যদপ্তরে যেখানে ডাক্তার নেই, সরঞ্জাম নেই, স্বাস্থ্যকর্মী পর্যাপ্ত নেই, সেখানে taxation bureaucrats দের বদলি করলে স্বাস্থ্যপরিষেবার কি উন্নতি হওয়া সম্ভব? 


কিন্তু সবচেয়ে বৈপ্লবিক ও striking বিষয়টি হল উপরমহলের আপত্তি সত্ত্বেও কর দপ্তরের অফিসাররা ভিন্ রাজ্য থেকে GST ফাঁকি দিয়ে goods নিয়ে আসা ব্যবসায়ীদের goods seize করেছেন। ABP র খবর অনুযায়ী নবান্ন থেকে সেই অফিসারদের কাছে টেলিফোনিক নির্দেশ গিয়েছিল তাঁরা যেন seized goods ছেড়ে দেন এবং GST আদায়ে জোর না দেন। কিন্তু অফিসাররা সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছেন এবং কাজ শেষ করেই ফিরেছেন। 


এই একইভাবে একবার ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের শ্রীকান্ত মোহতার অফিসে raid করতে গিয়েছিলেন করদপ্তরের অফিসাররা এবং সেখানে পৌঁছনোর পর নবান্নের নির্দেশে তাঁদেরকে কাজ না করেই সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়। কিন্তু এইবার অফিসাররা সেইধরনের টেলিফোনিক নির্দেশ অগ্রাহ্য করেছেন এবং কাজ শেষ করেই ফিরেছেন। পেনাল্টিবাবদ এর ফলে রাজ্যসরকারের আয় হবে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা! তাও মাত্র দুটি container seize করে! Bravo! 


এরকম না জানি আরও কত কাঁচাব্যবসা চলছে রাজ্যজুড়ে। সরকারি treasury তে tax জমা পড়ছে না, কিন্তু পার্টিফাণ্ডে যে তোলা জমা পড়ছে না, এমন কোনো গ্যারান্টি বোধ হয় নেই। ফল ভোগ করছে সাধারণ ক্রেতা। ব্যবসায়ীরা জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে, আর দোষ দিচ্ছে GST কে। ক্রেতাও বুঝছেন না যে আসলে চলছে একটা ঘোটালা।


যদি প্রশ্ন ওঠে যে উপরমহল যেখানে চাইছে না সেখানে অফিসাররা নিজেদের গরজে goods seize করতে গেলেন কেন, সেক্ষেত্রে উত্তরটা বোধ হয় খুব সহজ এবং কর্মরত মানুষমাত্রেরই তা আন্দাজ করতে পারবার কথা। অর্থদপ্তরের উপরমহল কর অফিসারদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন মৌখিকভাবে, যার কোনো অফিসিয়াল রেকর্ড থাকছে না। ফলে সেই নির্দেশ মেনে রাজস্ব আদায়ে ঢিলা দিলে, দু তিন বছর বাদে যখন পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব রাজস্ব আদায় সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়বে, তখন দায়ী করা হবে এই অফিসারদেরকেই। তাঁদেরকেই অপদার্থ প্রমাণ করা হবে এবং হয়ত heckle করা হবে অন্যায়ভাবে। তাই উপরমহলের এই মৌখিক নির্দেশ অমান্য করে GST ফাঁকি দেওয়া ও ভিনরাজ্য থেকে personal capacity তে জিনিস নিয়ে এসে এ রাজ্যে বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের জিনিস পাকড়াও করে অত্যন্ত সঠিক কাজ করেছেন অফিসাররা। 


সমস্ত বিচক্ষন মানুষ মাত্রেই আশা করি বুঝতে পারবেন রাজ্যের রাজস্ব আদায়ব্যবস্থা ও পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেওয়া আসলে ঠিক কতখানি রাজ্যের স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপ। আমার কথা হল, একথা ঠিকই যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তরতর করে এগোচ্ছে এবং হয়ত পরবর্তী নির্বাচনে বিজেপিই বিধানসভা গঠন করবে। কিন্তু তা বলে বাস্তবে হারার আগেই TMC র মনে মনে একেবারে হেরে বসে থাকার কি কোনো মানে হয়? By chance TMC তো জিতেও যেতে পারে। তখন এই বিধ্বস্ত, দেউলিয়া রাজ্য আপনারা সামলাবেন কি ভাবে? 


করফাঁকি দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা এবং তার ফলে বহু ব্যবসায়ীদের unit প্রতি লভ্যাংশ বাড়ছে কিন্তু জিনিসপত্রের দাম কমছে না অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার এতে কোনো বাধা দিতে চাইছে না। আর একটি ব্লগে বিস্তারিত লিখেছি, কিভাবে ঘটছে GST ফাঁকি দিয়ে আন্তঃরাজ্য transaction ঘোটালা। may please read.  

Comments

Popular posts from this blog

রথযাত্রা: কুমুদরঞ্জন মল্লিক

নব্য কথামালা: শেয়াল ও সারসের গল্প

Karnataka Election Result 2023: Observations

এত প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গে শিল্প-খরা: কেন?