রাজ্যে ইসলাম আগ্রাসনে বাংলাপক্ষের ভূমিকা: পর্ব ১
https://www.facebook.com/story.php?story_fbid=336553483577739&id=100016692693608
এই সিরিজটা লিখছি ফেসবুকে। পর্ব ১ ফেসবুকে দিয়েছি ২৩ শে সেপ্টেম্বর, রবিবার। ব্লগে দিচ্ছি আজ, এখন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই এবং সেগুলির পরিপ্রেক্ষিতে করতে চাই বেশ কিছু প্রশ্ন।
যেমন ধরা যাক, ২ নম্বর ছবিটি। এঁকে আমরা মোটামুটি অনেকেই চিনি। বাংলাপক্ষের এই ভদ্রলোক বলেছেন যে প্রয়োজনে উনি হিব্রুতেও কথা বলবেন, কিন্তু হিন্দিতে বলবেন না। অর্থাৎ ভারতবর্ষের একটি অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে বসে ভারতরাষ্ট্রের দুইটি অফিসিয়াল ভাষার মধ্যে একটিকে উনি কোনোমতেই ব্যবহার করতে চান না। কোনো কারণেই না।
তা সে উনি যা-ই বলুন, রাজ্যসরকার তা বলেন নি। কিন্তু রাজ্যসরকারের মনের কথাও কি তাই? এ প্রশ্ন হঠাৎ কেন তুলছি?
দেখা যাক্, ১ নম্বর ছবিটি। কলকাতা এয়ারপোর্টের গেটের সামনের একটি সাইনবোর্ডের ছবি। সরকারি সাইনবোর্ড। বোর্ডটিতে তিনটি ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে। ইংরিজি, বাংলা ও উর্দু। বাংলা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষা ও ইংরিজি ভারতীয় ইউনিয়নের একটি অফিসিয়াল ভাষা। এই পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু উর্দু? কাদের ভাষা?
যদি ধরে নিই যে হিন্দি আমরা চাই না, কারণ বাংলা এই মুহূর্তে পৃথিবীরই সমৃদ্ধতম ও সুমিষ্টতম ভাষা। ধরে নিলাম হিন্দির প্রয়োজন আমাদের নেই। কিন্তু তার বদলে উর্দুর প্রয়োজন কি আছে? পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত অধিবাসীদের মধ্যে ক'জন চান হিন্দি হটিয়ে উর্দু আনতে? প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরও জানা দরকার।
এই হল ১ম প্রশ্ন।
এবার মনে করা যাক্, এই বোর্ডটি যদি কলকাতা এয়ারপোর্টের গেটের কাছে না থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টের গেটের সামনে থাকত, তবে কি উর্দু নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠত? ইসলামিক বাংলাদেশে যদি ইংরিজি, বাংলা ও উর্দু, এই তিনটি ভাষায় বোর্ড থাকত, তবে বেমানান হত কি?
অনেকেই হয়ত বলবেন যে উর্দু একটি ভারতীয় ভাষা। বহু ভারতীয় উর্দুতে কথা বলেন। সত্যি কথা। কিন্তু এর পাশাপাশি আর একটি statistical fact হল উর্দু ব্যবহৃত হয় মূলতঃ একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের দ্বারা। এবং বাংলা যেমন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রাজ্যভাষা, উর্দু তেমনই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান রাজ্যভাষা।
ক'জন অমুসলমান ভারতীয় উর্দু ব্যবহার করেন, সেই সংখ্যাটা জানাও জরুরী নয় কি? কিভাবে জানা যেতে পারে? সেন্সাস ডেটা থেকে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে আপাততঃ যাচ্ছি না।
বাংলাপক্ষের লোকেরা কি এই বোর্ডটিকে সমর্থন করেন? যদি না করেন, তাহলে তিন-ভাষা-কমিউনিকেশন-পরিকাঠামোয় পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় ভাষাটি কি হওয়া উচিত বলে উনি মনে করেন তাঁরা? উর্দুই কি? নাকি হিব্রু?
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কি মনে করেন, তা আমরা জানি। তিনি বলেই দিয়েছেন যে বহু মানুষ এ রাজ্যে আছেন, যাঁরা উর্দুভাষী। তাই উর্দু।
বেশ।
এবার প্রশ্ন হল যাঁরা উর্দুভাষী, তাঁরা কি বাঙালী? যদি আদৌ হন, তাহলে তাঁরা হলেন উর্দুভাষী বাঙালী। অর্থাৎ তাঁরা বাংলাভাষী বাঙালী নন। তার মানে সব বাঙালীই বাংলাভাষী নন। এর অর্থ হল, 'বাঙালী' এবং 'বাংলাভাষী' শব্দদুটি নিশ্চিতভাবেই সমার্থক নয়। সেক্ষেত্রে বাংলাভাষী হলেই কাউকে যে উর্দুভাষী বাঙালীর সাথে বাঙালীত্বের টানে একাত্ম হতে হবে, এমন কোনো কথা আছে কি? প্রসঙ্গতঃ আবারও উল্লেখ্য যে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষা হল বাংলা যেখানে ম্যাপস অফ ইণ্ডিয়া অনুযায়ী উর্দু হল জম্মু ও কাশ্মীরের ভাষা। ৩য় ছবিটি দ্রষ্টব্য।
এই প্রসঙ্গেই ২য় প্রশ্ন, কতজন পশ্চিমবঙ্গবাসী বাঙালী(?) জম্মু ও কাশ্মীরের ভাষাকে বাঙালীর বাসভূমি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষার তুলনায় বেশি আপন বলে মনে করেন যাতে কলকাতা বিমানবন্দরের প্রবেশপথে বাংলা ও ইংরিজির বাইরেও উর্দুভাষার সাইনবোর্ড তাঁদের আবশ্যক মনে হয়?
পশ্চিমবঙ্গের এই উর্দুভাষীরা যদি বাঙালী না হন, তাহলে তাঁরা কারা? বাংলাদেশী? নাকি পাকিস্তানি?
যদি বাংলাদেশী হন, তাহলে যে বাংলাদেশ উর্দু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাভাষার জন্য লড়াই করেছিল সেই বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই এক দেশ নয়! ভৌগোলিক সত্তা এক হলেও দুটি দেশের আত্মিক সত্তা কিছুতেই এক হতে পারে না। অর্থাৎ মানতেই হবে যে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন সর্ব অর্থেই ব্যর্থ হয়েছে। যে উর্দুকে ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্ম, সেই উর্দু প্রকৃতই গৃহীত হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ বাংলাদেশীর দ্বারা। তাছাড়া 'বাংলা' বলে অধিকাংশ বাংলাদেশী যে ভাষাটি ব্যবহার করেন, তা বিকৃত, নান্দনিকভাবে অসুন্দর। ঠিক বাংলা কোনওভাবেই নয়।
আর যদি এই উর্দুভাষীরা পাকিস্তানি হন, বা এমনকি ভারতীয়ও হন, তাহলেও একটি প্রশ্ন আছে। পশ্চিমবঙ্গে তো বহু হিন্দিভাষী মানুষও থাকেন। তাই যদি হিন্দি আর উর্দুর মধ্যে তৃতীয় ভাষা বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন্ টিকে বেছে নেবেন অধিকাংশ প্রকৃত পশ্চিমবঙ্গবাসী?
এইটি ৩য় প্রশ্ন।
এবার আসা যাক্ ৪র্থ ছবিটিতে। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম বুদ্ধিজীবী মহল ঘোষণা করছেন যে তাঁরা যে বাঙালী, তাতে তাঁরা লজ্জিত। কিন্তু তাঁরা যে মুসলমান, তাতে গর্বিত। অর্থাৎ এবার যদি ধরে নেওয়া হয় যে এয়ারপোর্টের সামনের ঐ বোর্ডটিতে ইংরিজি, বাংলার সঙ্গে উর্দুকে স্থান দেওয়া হয়েছে এই শ্রেণীর 'গর্বিত মুসলমান লজ্জিত বাঙালী' পশ্চিমবঙ্গবাসীকে গুরুত্ব দিয়ে, তাহলে কি খুব ভুল করা হবে? প্রশ্ন হল, এঁরা যে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গে, সে কি সংখ্যার জোরেই? না কি অর্থের জোরও আছে? এঁদের বৈধ সংখ্যা ঠিক কত, তা জানার কি প্রয়োজন নেই? Please note, এঁদের সংখ্যা শুধু জানতে চাই তা নয়, বৈধ সংখ্যা কত, সেইটি জানা প্রয়োজন।
এই হল ৪র্থ প্রশ্ন।
সমস্ত বাংলাপক্ষপ্রেমী বাঙালীরা বা সমস্ত তেমন সাধারণ বাঙালীরা (আমি ভেস্টেড ইন্টারেস্ট নিয়ে চলা ক্রিমিনাল / বুদ্ধিজীবী / বহু কমিউনিস্টদের কথা বলছি না) যাঁরা মনে মনে ভাবেন যে দুই বাংলা এক হয়ে গেলেই বোধ হয় ভালো, তাঁরাও কি পশ্চিমবঙ্গে এই 'লজ্জিত বাঙালী গর্বিত মুসলমান' এর প্রকৃত বৈধ সংখ্যা জানতে ইচ্ছুক নন?
এই হল ৫ নম্বর ও আপাততঃ শেষ প্রশ্ন।
এবার দয়া করে ভাবুন, এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া কিভাবে সম্ভব?
একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের NRC ও NRC কালীন স্ট্যাটিসক্যাল রিসার্চের মাধ্যমে তা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটিতে এত বছরে যত ক্লেদ, যত সংঘর্ষভার, যত সমস্ত burning confusions & questions জমা হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গে NRC যখন হবে, তখন এই সমস্ত প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর once & for all পেয়ে যাওয়ার জন্য NRC-allied একটা statistical research এর প্রয়োজনও অবশ্যই আছে। সীমান্তবর্তী রাজ্যের সুরক্ষার স্বার্থে এটি জরুরী।
প্রকৃত পশ্চিমবঙ্গবাসী প্রকৃত বাঙালীরও একটু নিশ্চিন্তে থাকার অধিকার কি নেই?
এই সিরিজটা লিখছি ফেসবুকে। পর্ব ১ ফেসবুকে দিয়েছি ২৩ শে সেপ্টেম্বর, রবিবার। ব্লগে দিচ্ছি আজ, এখন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কিছু তথ্য তুলে ধরতে চাই এবং সেগুলির পরিপ্রেক্ষিতে করতে চাই বেশ কিছু প্রশ্ন।
যেমন ধরা যাক, ২ নম্বর ছবিটি। এঁকে আমরা মোটামুটি অনেকেই চিনি। বাংলাপক্ষের এই ভদ্রলোক বলেছেন যে প্রয়োজনে উনি হিব্রুতেও কথা বলবেন, কিন্তু হিন্দিতে বলবেন না। অর্থাৎ ভারতবর্ষের একটি অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে বসে ভারতরাষ্ট্রের দুইটি অফিসিয়াল ভাষার মধ্যে একটিকে উনি কোনোমতেই ব্যবহার করতে চান না। কোনো কারণেই না।
তা সে উনি যা-ই বলুন, রাজ্যসরকার তা বলেন নি। কিন্তু রাজ্যসরকারের মনের কথাও কি তাই? এ প্রশ্ন হঠাৎ কেন তুলছি?
দেখা যাক্, ১ নম্বর ছবিটি। কলকাতা এয়ারপোর্টের গেটের সামনের একটি সাইনবোর্ডের ছবি। সরকারি সাইনবোর্ড। বোর্ডটিতে তিনটি ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে। ইংরিজি, বাংলা ও উর্দু। বাংলা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষা ও ইংরিজি ভারতীয় ইউনিয়নের একটি অফিসিয়াল ভাষা। এই পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু উর্দু? কাদের ভাষা?
যদি ধরে নিই যে হিন্দি আমরা চাই না, কারণ বাংলা এই মুহূর্তে পৃথিবীরই সমৃদ্ধতম ও সুমিষ্টতম ভাষা। ধরে নিলাম হিন্দির প্রয়োজন আমাদের নেই। কিন্তু তার বদলে উর্দুর প্রয়োজন কি আছে? পশ্চিমবঙ্গের প্রকৃত অধিবাসীদের মধ্যে ক'জন চান হিন্দি হটিয়ে উর্দু আনতে? প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরও জানা দরকার।
এই হল ১ম প্রশ্ন।
এবার মনে করা যাক্, এই বোর্ডটি যদি কলকাতা এয়ারপোর্টের গেটের কাছে না থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টের গেটের সামনে থাকত, তবে কি উর্দু নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠত? ইসলামিক বাংলাদেশে যদি ইংরিজি, বাংলা ও উর্দু, এই তিনটি ভাষায় বোর্ড থাকত, তবে বেমানান হত কি?
অনেকেই হয়ত বলবেন যে উর্দু একটি ভারতীয় ভাষা। বহু ভারতীয় উর্দুতে কথা বলেন। সত্যি কথা। কিন্তু এর পাশাপাশি আর একটি statistical fact হল উর্দু ব্যবহৃত হয় মূলতঃ একটি বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের দ্বারা। এবং বাংলা যেমন পশ্চিমবঙ্গের প্রধান রাজ্যভাষা, উর্দু তেমনই জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান রাজ্যভাষা।
ক'জন অমুসলমান ভারতীয় উর্দু ব্যবহার করেন, সেই সংখ্যাটা জানাও জরুরী নয় কি? কিভাবে জানা যেতে পারে? সেন্সাস ডেটা থেকে। কিন্তু সে প্রসঙ্গে আপাততঃ যাচ্ছি না।
বাংলাপক্ষের লোকেরা কি এই বোর্ডটিকে সমর্থন করেন? যদি না করেন, তাহলে তিন-ভাষা-কমিউনিকেশন-পরিকাঠামোয় পশ্চিমবঙ্গের তৃতীয় ভাষাটি কি হওয়া উচিত বলে উনি মনে করেন তাঁরা? উর্দুই কি? নাকি হিব্রু?
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কি মনে করেন, তা আমরা জানি। তিনি বলেই দিয়েছেন যে বহু মানুষ এ রাজ্যে আছেন, যাঁরা উর্দুভাষী। তাই উর্দু।
বেশ।
এবার প্রশ্ন হল যাঁরা উর্দুভাষী, তাঁরা কি বাঙালী? যদি আদৌ হন, তাহলে তাঁরা হলেন উর্দুভাষী বাঙালী। অর্থাৎ তাঁরা বাংলাভাষী বাঙালী নন। তার মানে সব বাঙালীই বাংলাভাষী নন। এর অর্থ হল, 'বাঙালী' এবং 'বাংলাভাষী' শব্দদুটি নিশ্চিতভাবেই সমার্থক নয়। সেক্ষেত্রে বাংলাভাষী হলেই কাউকে যে উর্দুভাষী বাঙালীর সাথে বাঙালীত্বের টানে একাত্ম হতে হবে, এমন কোনো কথা আছে কি? প্রসঙ্গতঃ আবারও উল্লেখ্য যে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষা হল বাংলা যেখানে ম্যাপস অফ ইণ্ডিয়া অনুযায়ী উর্দু হল জম্মু ও কাশ্মীরের ভাষা। ৩য় ছবিটি দ্রষ্টব্য।
এই প্রসঙ্গেই ২য় প্রশ্ন, কতজন পশ্চিমবঙ্গবাসী বাঙালী(?) জম্মু ও কাশ্মীরের ভাষাকে বাঙালীর বাসভূমি পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যভাষার তুলনায় বেশি আপন বলে মনে করেন যাতে কলকাতা বিমানবন্দরের প্রবেশপথে বাংলা ও ইংরিজির বাইরেও উর্দুভাষার সাইনবোর্ড তাঁদের আবশ্যক মনে হয়?
পশ্চিমবঙ্গের এই উর্দুভাষীরা যদি বাঙালী না হন, তাহলে তাঁরা কারা? বাংলাদেশী? নাকি পাকিস্তানি?
যদি বাংলাদেশী হন, তাহলে যে বাংলাদেশ উর্দু আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাভাষার জন্য লড়াই করেছিল সেই বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই এক দেশ নয়! ভৌগোলিক সত্তা এক হলেও দুটি দেশের আত্মিক সত্তা কিছুতেই এক হতে পারে না। অর্থাৎ মানতেই হবে যে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন সর্ব অর্থেই ব্যর্থ হয়েছে। যে উর্দুকে ঠেকাতে বাংলাদেশের জন্ম, সেই উর্দু প্রকৃতই গৃহীত হয়ে গিয়েছে অধিকাংশ বাংলাদেশীর দ্বারা। তাছাড়া 'বাংলা' বলে অধিকাংশ বাংলাদেশী যে ভাষাটি ব্যবহার করেন, তা বিকৃত, নান্দনিকভাবে অসুন্দর। ঠিক বাংলা কোনওভাবেই নয়।
আর যদি এই উর্দুভাষীরা পাকিস্তানি হন, বা এমনকি ভারতীয়ও হন, তাহলেও একটি প্রশ্ন আছে। পশ্চিমবঙ্গে তো বহু হিন্দিভাষী মানুষও থাকেন। তাই যদি হিন্দি আর উর্দুর মধ্যে তৃতীয় ভাষা বেছে নিতে বলা হয়, তাহলে কোন্ টিকে বেছে নেবেন অধিকাংশ প্রকৃত পশ্চিমবঙ্গবাসী?
এইটি ৩য় প্রশ্ন।
এবার আসা যাক্ ৪র্থ ছবিটিতে। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম বুদ্ধিজীবী মহল ঘোষণা করছেন যে তাঁরা যে বাঙালী, তাতে তাঁরা লজ্জিত। কিন্তু তাঁরা যে মুসলমান, তাতে গর্বিত। অর্থাৎ এবার যদি ধরে নেওয়া হয় যে এয়ারপোর্টের সামনের ঐ বোর্ডটিতে ইংরিজি, বাংলার সঙ্গে উর্দুকে স্থান দেওয়া হয়েছে এই শ্রেণীর 'গর্বিত মুসলমান লজ্জিত বাঙালী' পশ্চিমবঙ্গবাসীকে গুরুত্ব দিয়ে, তাহলে কি খুব ভুল করা হবে? প্রশ্ন হল, এঁরা যে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গে, সে কি সংখ্যার জোরেই? না কি অর্থের জোরও আছে? এঁদের বৈধ সংখ্যা ঠিক কত, তা জানার কি প্রয়োজন নেই? Please note, এঁদের সংখ্যা শুধু জানতে চাই তা নয়, বৈধ সংখ্যা কত, সেইটি জানা প্রয়োজন।
এই হল ৪র্থ প্রশ্ন।
সমস্ত বাংলাপক্ষপ্রেমী বাঙালীরা বা সমস্ত তেমন সাধারণ বাঙালীরা (আমি ভেস্টেড ইন্টারেস্ট নিয়ে চলা ক্রিমিনাল / বুদ্ধিজীবী / বহু কমিউনিস্টদের কথা বলছি না) যাঁরা মনে মনে ভাবেন যে দুই বাংলা এক হয়ে গেলেই বোধ হয় ভালো, তাঁরাও কি পশ্চিমবঙ্গে এই 'লজ্জিত বাঙালী গর্বিত মুসলমান' এর প্রকৃত বৈধ সংখ্যা জানতে ইচ্ছুক নন?
এই হল ৫ নম্বর ও আপাততঃ শেষ প্রশ্ন।
এবার দয়া করে ভাবুন, এই প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া কিভাবে সম্ভব?
একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের NRC ও NRC কালীন স্ট্যাটিসক্যাল রিসার্চের মাধ্যমে তা সম্ভব। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটিতে এত বছরে যত ক্লেদ, যত সংঘর্ষভার, যত সমস্ত burning confusions & questions জমা হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গে NRC যখন হবে, তখন এই সমস্ত প্রশ্নগুলোর যথাযথ উত্তর once & for all পেয়ে যাওয়ার জন্য NRC-allied একটা statistical research এর প্রয়োজনও অবশ্যই আছে। সীমান্তবর্তী রাজ্যের সুরক্ষার স্বার্থে এটি জরুরী।
প্রকৃত পশ্চিমবঙ্গবাসী প্রকৃত বাঙালীরও একটু নিশ্চিন্তে থাকার অধিকার কি নেই?
Comments
Post a Comment