ইসলামপুর-এপিসোড: রাজ্যে ইসলাম আগ্রাসনের হিমশৈলের চূড়ামাত্র: পর্ব ২

এই সিরিজের টাইটেলটি যথার্থ। ইসলামপুর-এপিসোড আসলে রাজ্যে ইসলাম আগ্রাসনের হিমশৈলের চূড়ামাত্র দেখিয়েছে। প্রকৃত আগ্রাসনের থাবা ঠিক কতদূর এগিয়েছে, তা বোধ হয় আমরা সঠিক অনুমান করতে পারছি না। তার অংশমাত্র দেখতে পাওয়া যাচ্ছে খণ্ড খণ্ড চিত্রে।

ইসলামপুরের দারিভিট স্কুলে জোর করে উর্দু শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টা নিয়ে প্রতিবাদ ও গোলযোগ ঘনিয়ে উঠতেই রাজ্যে শুরু হয়ে গেল একের পর এক এমন সব ঘটনা যেগুলো আপাত বিচ্ছিন্ন হলেও, সবকটি ঘটনাই মাইনরিটি কম্যুনিটির সঙ্গে সম্পর্কিত।

কাকতালীয়?

উদাহরণ দিই। 2nd অক্টোবর দমদম নাগের বাজারে হঠাৎ বিষ্ফোরণ ঘটল। মারা গেল একটি সাত বছরের শিশু, বিভাস। বেশ কয়েকজন আহত হলেন। বিষ্ফোরণ ঘটার প্রায় সাথে সাথেই রাজ্যের নেতা ও মন্ত্রীরা অবিলম্বে বিবৃতি দিলেন যে বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে RSS.

তারপর সংবাদে প্রকাশিত হল যে ঐ দমদমেই নাকি ঘাঁটি গেড়ে বাস করে আল কায়দার জঙ্গীরা।

https://www.sangbadpratidin.in/kolkata/al-qaeda-militants-climbed-in-dum-dum-explosion/

তারপর প্রকাশিত হল, দমদম বিষ্ফোরণের পিছনে হাত আছে বাংলাদেশের এক জঙ্গীগোষ্ঠীর। নাম আনসারুল্লা বাংলা টিম বা ABT.

https://kolkata24x7.com/abt-militant-of-bdesh-involves-in-nagerbazar-blast-cid-claims.html

খেয়াল করতে হবে এই জঙ্গীগোষ্ঠীটিও 'বাংলা' নামটি নিয়ে obsessed. তাদের নামও আনসারুল্লা বাংলা। বাংলাপক্ষও এমনই বাংলা নিয়ে obsessed. যদিও এই মিল কাকতালীয়ও হতে পারে।

2nd অক্টোবরের বিষ্ফোরণের ঠিক পরেরদিনই, অর্থাৎ 3rd অক্টোবর, কলকাতার রাস্তায় সভা করলেন কলকাতার ইমামরা। এমন অদ্ভুত ঘটনা প্রত্যাশিত ছিল না। অভিপ্রেত তো নয়ই। সভায় জানালেন তাঁদের লিস্ট অফ ডিমাণ্ডস্ ফ্রম দ্য গভর্ণমেন্ট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল। যদি এমন সন্দেহ করি যে নির্ধারিত ঐ সভার ঠিক আগের দিন নাগের বাজারে বিষ্ফোরণটি আসলে ওঁরা একটা অ্যালার্ম বেল বাজানোর মত করে বাজালেন, তাহলে কি খুব biased মনে হবে আমার চিন্তাভাবনা? আপাতদৃষ্টিতে আনসার বাংলা জঙ্গীগোষ্ঠী, বাংলাপক্ষ আর কলকাতার ইমামদের কোনো সম্পর্ক নেই ঠিকই, কিন্তু সত্যিই কি কোনো সম্পর্ক নেই?

নাকি ওঁরা ধাপে ধাপে কোনো অ্যাকশন প্ল্যান ইমপ্লিমেন্ট করছেন? সন্দেহ করা কি খুব অযৌক্তিক হবে? ইমামদের দাবীগুলো কি ছিল একবার পড়ে নিন।

https://www.thestatesman.com/cities/west-bengal-muslims-body-demands-rs-2-lakh-aid-each-to-all-madarasas-1502692466.html

সবাই জেনে গেলেন যে মুসলমান ইমাম, মোয়াজ্জিন ইত্যাদিরা রাস্তায় নেমেছেন আরও বেশি ভাতার দাবীতে এবং আরও অনেক দাবী নিয়ে। অন্যতম দাবী ছিল বর্তমানে রাজ্যের যে ২০০ টি মাদ্রাসা সরকারি এইড পায় সেগুলির সঙ্গে আরও ১০,০০০ মাদ্রাসার জন্য সরকারি এইড দিতে হবে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় দাবীটি ছিল, আরও ১০,০০০ মাদ্রাসার শিক্ষকদের সরকারি চাকরি দিতে হবে।

কেন?

দারিভিটের সরকারি স্কুলে জোর করে উর্দু শিক্ষককে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়া গেল না বলেই কি ইমামরা ক্ষেপে গিয়ে তাদের সভায় আরও ১০,০০০ মাদ্রাসার জন্য সরকারি এইড দাবী করল?

প্রথমেই সন্দেহ হল এই ইমামসভাটি একটি গড়াপেটা ম্যাচ। সেই  সন্দেহ ফেসবুকে প্রকাশ করেছিলাম 4th অক্টোবরেই।

https://www.facebook.com/groups/223180988253476?view=permalink&id=357209781517262

ফেসবুক পোস্টের লিঙ্ক খুলে ছবিতে নীচের লোকটিকে দেখুন। ইনি অন্যতম নেতৃস্থানীয়, যিনি একদা হুমকি দিয়েছিলেন যে রোহিঙ্গাদের পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরানো যাবে না। আবার ইনিই ইমাম-মিছিলেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।

প্রশ্ন - সন্দেহ ১: এই যে হুমকি, প্রতিবাদ মিছিল, এগুলো কি আসলে got-up প্রোগ্রামস্? মমতা এবং মুসলিম লবির মধ্যে understanding তৈরি করে? যাতে মমতা হিন্দুদের বার্তা দিতে পারেন যে 'দেখো এত করেও আমি মুসলমানদের মন পাই নি?' এবং তার দ্বারা হিন্দুদের ক্ষুব্ধ মনকে কিছুটা ভিজিয়ে হিন্দু ভোট যাতে বিজেপির দিকে চলে না যায়, তাকে ঠেকানো?

এই সন্দেহ কামরুজ্জামান মোল্লার ঐ হুমকি দেখে আগেও হয়েছিল। এমন হওয়া অসম্ভব নয় যে এগুলো সবই গট-আপ্ ম্যাচ খেলা হচ্ছে।

এমনকি এই মিছিলের জন্য ইমামরা নাকি পুলিশ পারমিশন পায় নি। অথচ তা সত্ত্বেও যেখানে সভা করল, সেখানে প্রচুর পুলিশ প্রোটেকশন। এ থেকেই সন্দেহ আরও জোরদার হচ্ছে যে এসবই আসলে গট-আপ্ ম্যাচ বিটউইন মমতা & মুসলিমস্।

কেন বলছি?

কারণ দুর্গাপুজোয় সরকারি ডোল বা ইমাম, মোয়াজ্জিনদের ভাতা দেওয়া, এসব কিছুই অসাংবিধানিক। ইমামরা সেটা ভালোভাবে জানে। তাই দুর্গাপুজোয় সরকারি ডোলের বিরোধিতা করতে রাস্তায় নামলে তাদের অসাংবিধানিক ভাতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে জেনেও যখন তারা রাস্তায় নেমেছে, তখন সেই প্রতিবাদ গট-আপ্ ও দেখানোপনা প্রতিবাদ কি না তা নিয়ে সন্দেহ হয়।

পশ্চিমবঙ্গে ভোটে জিততে গেলে এখনও হিন্দু ভোট প্রয়োজনীয়। হিন্দু ভোট যদি বিজেপি পায়, তাহলে অনেকগুলো সিট বিজেপি জিতবে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের কি কি ভালো হবে তা তর্কসাপেক্ষ হলেও, একটা বিষয় নিশ্চিত হবে। পশ্চিমবঙ্গের ইসলামাইজেশনের গতি বেশ খানিকটাই রুদ্ধ হবে। বিজেপি কিচ্ছু করুক আর না করুক, মৌলবাদী মুসলিম তোষণ করবে না।

ফলে বিজেপিকে ঠেকাতে গেলে মমতার মুসলমানদের সহায়তা প্রয়োজন আবার মুসলমানদেরও প্রয়োজন মমতার সাহায্য নিয়ে বিজেপিকে ঠেকানো। কারণ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এলে পশ্চিমবঙ্গ দখল করে ইসলামাইজ করার ওদের এতদিনের পরিকল্পনা ধাক্কা খাবে।

তাই এই pseudo-protest by Muslims হয়ত মমতাকে plan fully হিন্দুদের দিকে কিছুটা ঠেলে দিয়ে মমতাকে হিন্দু ভোট ক্যাপচার করতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। কারণ হিন্দু ভোট পেয়ে মমতা জিতলে তবেই মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গ দখল করতে পারবে। বিজেপি এসে গেলে সেটা হবে না।

প্রশ্ন - সন্দেহ ২: মদিনাতুল হুজ্জ্বাজ নিয়ে লেখার সময়েই লিখেছিলাম যে দুর্গাপুজোয় সামান্য ১০,০০০ টাকা দিয়ে মমতাদেবী হয়ত ভোটের আগে মুসলমানদের জন্য আরও বড় কোনো সরকারি গ্রান্ট অনুমোদন করার গ্রাউণ্ড প্রস্তুত করছেন। এই ইমাম-প্রতিবাদ সেই সন্দেহকে আরও জোরদার করছে।

প্রশ্ন - সন্দেহ ৩: পশ্চিমবঙ্গের পিকচারে কি আসাদুদ্দিন ওয়েইসি সাহেবও এসে পা রেখেছেন? তিনিই কি ক্ষেপাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের? মমতার বিরুদ্ধে? পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান ভোট পাই (pie) টা অনেকটা বড় এবং যেকোনো vote-catcher politician এর জন্য খুবই লোভনীয়। ফলে সেই সন্দেহও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সেক্ষেত্রেও কিন্তু মুসলমানভোট যথাসম্ভব retain করার জন্য ভোটের আগে মমতা মুসলমানদের জন্য আবারও কল্পতরু হওয়ার চেষ্টা করবেন।

শেষ প্রশ্ন: সুবিশাল দুই হজ্জ্ব হাউস, নানা ভাতা, গ্রান্ট, কর্পোরেশনে চাকরি পাইয়ে দেওয়া, সিভিল সার্ভিসে মুসলমানদের প্রতিষ্ঠা দিতে চাওয়া, নম্বর কম পেলেও ছাত্রবৃত্তি দেওয়া, ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক লোন দেওয়া, কিছু ব্যবসার লাইসেন্স শুধু মুসলমানদের দেওয়া, রাজ্যকে বেআইনি অস্ত্র, বিষ্ফোরকের গুদাম বানিয়ে তোলা, সমস্তরকম সন্ত্রাসবাদীদেরকে সুখে শান্তিতে রাজ্যের যে কোনো জায়গায় থাকতে দেওয়া, ...এত কিছুর পরেও মমতা আর কি দিয়ে আরও তুষ্ট করতে পারবেন মুসলমানদের, সে-ই হল মূল জিজ্ঞাসা!

আমাদের উচিত এখন থেকেই প্রতিবাদ করা। মমতা যেন আমাদেরই টাকা খরচ করে আমাদেরকেই মারবার ব্যবস্থা আর না করতে পারেন। চাই #NRC4WestBengal. দেখা যাক্, পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের বৈধ সংখ্যা ঠিক কত।

https://www.timesnownews.com/india/article/kolkata-rally-imams-durga-puja-clubs-clerics-mamata-banerjee-hindu-majority-minority-appeasement-pujo-pandals/293582 (ক্রমশঃ)

Comments

Popular posts from this blog

রথযাত্রা: কুমুদরঞ্জন মল্লিক

কোভিশিল্ড কাহিনী

নব্য কথামালা: শেয়াল ও সারসের গল্প

SSC চাকরি বাতিল: যোগ্য - অযোগ্য বিভাজন আদৌ সম্ভব?