কুস্তিগীরদের অভিযোগ: প্রত্যক্ষ কারণটি কি?
এম জে আকবরের বিরুদ্ধে “মি-টু” অভিযোগ এনেছিলেন সাংবাদিক প্রিয়া রামানি। 2017 সালে ভ্যোগ পত্রিকায় আর্টিকল লিখে তাঁর প্রাক্তন বসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন প্রিয়া, অতঃপর এক বছর পর 2018 সালের 8ই অক্টোবর টুইট করে প্রকাশ করেন বসের নাম এম জে আকবর। ঘটনার জেরে 2019’এর লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে, ভারত সরকারের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবরকে পদত্যাগ করতে হয়, যদিও এ হেন অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতে যান আকবর এবং মানহানির মামলা করেন রামানির বিরুদ্ধে। বলেন, ভিত্তিহীন অভিযোগে সুনাম ও সম্মান নষ্ট হয়েছে তাঁর। কিন্তু অ্যাডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম জে আকবরের মানহানির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন "a man of social status can also be a sexual harasser" এবং "sexual abuse takes away dignity and self-confidence, and right of reputation can't be protected at the cost of right to dignity".
প্রিয়া রামানির বক্তব্য ছিল, এম জে আকবরের সুনাম নষ্ট হওয়ার অভিযোগ ধোপে টেঁকে না কারণ রামানির পর তাঁর মত আর একজন সাংবাদিকও এম জে আকবরের বিরুদ্ধে ঐ একই অভিযোগ তুলেছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট এই যুক্তি মেনে নেন। আকবরের আইনজীবী প্রশ্ন তুলেছিলেন— যে ঘটনা 1993 সালে ঘটেছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ 24 বছর পর কেন? বিচারক বলেন কাজের জায়গায় যৌন হেনস্থা হয় সেই বিবেচনা মাথায় রেখে বলা যায় যে একজন মহিলা ক্ষোভ প্রকাশ করতে চাইলে কয়েক দশক বাদেও করতে পারেন।
অ্যাডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে যান এম জে আকবর এবং গত বছর জানুয়ারি মাসে জাস্টিস মুক্তা গুপ্তার বেঞ্চ তাঁর আবেদন গ্রহন করে।
এম জে আকবরের মতই অভিযোগ উঠেছে রেস্টলিং ফেডরেশন অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং’এর বিরুদ্ধে। এবং এই অভিযোগটিও উঠেছে 2024’এর লোকসভা নির্বাচনের আগের বছর। অভিযোগ এনেছেন সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগট আদি বিশ্ববিখ্যাত কুস্তিগীররা।
কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থা হয় এই সত্যকে স্মরণে রেখে প্রিয়া রামানির অভিযোগ গোড়াতেই সত্যি বলে ধরেছিলেন অ্যাডিশনাল চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযোগ যদি সত্যি না হয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়, তাহলে যে তার দ্বারা এম জে আকবরের কেরিয়ার শেষ করে দেওয়া হল, সেইটি বিবেচনা করা হয় নি। এর মাধ্যমে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার একটি মহিলাদরদী রূপ দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু এই রূপ আদতেই মহিলাদরদী কিনা তা আলোচ্য। “সামাজিক প্রতিষ্ঠাসম্পন্ন একজন পুরুষ যৌন হেনস্থাকারীও হতেই পারেন”— বিচারকের এ হেন বক্তব্যে পুরুষকে একেবারে গোড়াতেই যৌনমদমত্ত ধরে নিয়ে তাঁর দ্বারা নারীর যৌন হেনস্থায় প্রচ্ছন্ন সমর্থনের আভাস? সামাজিক প্রতিষ্ঠাসম্পন্ন পুরুষ কোনো মহিলাকে বেকায়দায় পেয়ে তাকে যৌন নিগ্রহ করলে বা করতে উদ্যত হলে সে কাজ কদর্য। কিন্তু যদি সে তা না করে কিন্তু মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত হয়, তবে তা অভিযোগকারিনীর দিক থেকেও কদর্যতা। গভীরভাবে ভাবলে, নারী যদি পুরুষকে যৌন হেনস্থার মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসায়, তবে গোপনে তা আদতে সেই নারীরও ধর্ষকাম। চব্বিশ বছর পর প্রিয়া রামানি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন কিনা তার বিচারে বিচারব্যবস্থার কাছ থেকে অধিকতর বুদ্ধিদীপ্ত পর্যবেক্ষণ প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু বিচারক গতানুগতিকতার বাইরে বেরোন নি। তাই দিল্লি হাইকোর্ট বিষয়টিকে কিভাবে দেখবে সেইটি জানার ঔৎসুক্য থাকবে।
নারীর সম্মানের গোল্ড স্ট্যাণ্ডার্ড নির্ধারণ করতে হলে পুরুষের চরিত্রবলকেও একই কষ্টিপাথরে যাচাই করা আবশ্যক। পুরুষ সর্বদা যৌনমদমত্ত— এমন ধারণার মধ্যে পুং-যৌনতার শ্রেষ্ঠত্বের সামাজিক প্রতিষ্ঠা বজায় রাখার পরোক্ষ উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়। অন্যদিকে, মহিলাদেরকে এ বিষয়ে ‘মহিলা’ বলেই ক্লিন চিট দেওয়ার মধ্যেও থাকে মহিলাদের প্রতি পরোক্ষ অবজ্ঞাভাব এবং/অথবা মহিলা চরিত্র সম্বন্ধে এক জাতীয় স্বেচ্ছাস্বীকৃত অজ্ঞতা। যৌন জীবন নিয়ে মিথ্যাচার মহিলারা করেন না এমন দাবী করার জায়গায় ভারতীয় সমাজ নেই। তৎসত্ত্বেও, অভিযোগকারিণী মহিলা বলেই তাঁর অভিযোগটি সত্য ধরে নেওয়ার মধ্যে একখানি বৈচারিক গোলযোগ আছেই।
যে সমাজে নারীর সামাজিক সুরক্ষার বিষয়টি এতদবধি সুনিশ্চিত হয়ে ওঠে নি, সেই সমাজ যদি যৌন হেনস্থার বিষয়ে নারীর কেবলমাত্র মুখের কথাটুকুকেই সত্য বলে মান্যতা দেয়, তবে সেই মান্যতার মাধ্যমে নারীকে যৌন সামগ্রী বলে মনে করার ভাবটিতেই পরোক্ষ সমর্থনের শীলমোহর পড়ে। অনুরূপভাবে, যে সমাজ নারীকে যৌন সামগ্রী ভাবে অথচ চক্ষুলজ্জার খাতিরে তা সম্যক স্বীকার করতে পারে না, সেই দ্বিচারী সমাজে কোনো কোনো নারী যে গোপনে নিজের যৌনতার পণ্যায়ণ করবে এবং বাজার থেকে গোপনে তার ফায়দা তুলতে চাইবে, পণ্যমুখী বাজারের নিয়মে তা স্বাভাবিক। এবং যেসব মহিলারা এমন করেন তাঁদের সংখ্যা কম নয়। গল্প, উপন্যাস, মুভি, ওটিটি প্লাটফর্ম এবং দৈনন্দিন বাস্তব জীবনে নিজেদের যৌনতার অপব্যবহার নিজেদের প্রয়োজনে করে থাকেন অসংখ্য মহিলা।
‘মেয়েটি মুখ খুললে তা সত্য নিশ্চয়’— এমন প্রতর্কের মধ্যে মেয়েদের প্রতি যৌন হেনস্থা যথাসম্ভব সহ্য করার পরোক্ষ সামাজিক নির্দেশ প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকে না কি? ‘সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গেছে বলেই মুখ খুলেছে সে’— এমন বলা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে সহ্যশক্তিকে বাঁধ দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে কেন সে প্রশ্ন তোলা আবশ্যক। এমন সামাজিক প্রত্যাশার মূল্য মেয়েদের সঙ্গে সঙ্গে দিতে হচ্ছে পুরুষকেও। বহু মেয়ে যেমন হেনস্থা সহ্য করেও মুখ খুলতে পারছেন না, অনেক মেয়ে আবার এটিকে পুরুষ-ফাঁসানোর একখানি অব্যর্থ ফাঁদ বলেও মনে করছেন। এমন মনে করার মধ্যে আদতে রয়েছে মহিলাদের প্রতি প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। কিন্তু প্রতিবাদের এই পদ্ধতিটি যে অনৈতিক তা বলতে মহিলাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে কারণ পুরুষ এক্ষেত্রে ভিক্টিম। বহু পুরুষ যেমন প্রকৃতই মহিলাদের যৌন সামগ্রী ভাবেন, অনেক পুরুষ আবার তেমন না ভেবেও বিপদে পড়েন। কোনো মহিলা হয়ত নিজের সুবিধার্থে ফাঁসিয়ে দেন পুরুষকে এবং আদায় করার চেষ্টা করেন বিনিময়মূল্য। সেসব ক্ষেত্রে নিজেদের যৌনতার মূল্য ধার্য করেন মহিলারা নিজেরাই অথচ পরিবর্তে ‘বেশ্যা’ পরিচয়ের দায়টি বহন করতে চান না। অপরপক্ষে, যে সব মহিলা যৌনতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহন করেছেন বা করতে বাধ্য হয়েছেন এবং বহন করে চলেছেন সে পেশার যাবতীয় নেতিবাচক দায়, যৌন হেনস্থার বিষয়ে তাঁদের মুখের কথার এইপ্রকার বিশ্বাসযোগ্যতা সমাজের কাছে নেই। অথচ তাঁরা যেহেতু প্রকাশ্যেই নিজেদের যৌনতার পণ্যায়ণ করেছেন, তাই যৌন হেনস্থার বিষয়ে তাঁদের কথার মূল্য হওয়া উচিত ছিল অধিকতর কিন্তু বাস্তবে তা নেই। বরং এই জাতীয় মহিলাদের প্রতি সমাজ অনাবশ্যক কঠোর। তাঁরা প্রকাশ্যেই নিজেদের যৌনতার পণ্যমূল্য ধার্য করেন বলেই বুঝি এমন কঠোরতা। অথচ যে মেয়ে নিজের যৌনতার পণ্যায়ণ করে গোপনে, আপাতদৃষ্টিতে বজায় রাখতে চায় অ-যৌনতার আড়াল, সমাজ তার মুখের কথাকেই সত্যের পরাকাষ্ঠা বিচার করতে চায়। সমাজকে এই দ্বিচারিতা থেকে বেরোতে হবে। ব্যবস্থা তৈরি হওয়া প্রয়োজন এমন যাতে যৌন হেনস্থা হওয়ার পরমুহূর্তেই আত্মমর্যাদা বজায় রেখেও অভিযোগ জানাতে পারেন মহিলাটি এবং অভিযোগ জানাতে অযথা দেরি হলে হ্রাস পায় তাঁর অভিযোগের গুরুত্ব।
এম জে আকবরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে প্রিয়া রামানির লেগেছে চব্বিশ বছর যদিও যখন অভিযোগটি তিনি তুলেছেন তার দীর্ঘ কাল আগে থেকেই হয়ত এম জে আকবরের সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল না। তাই এমন প্রশ্ন সঙ্গত যে অভিযোগ জানাতে এত দীর্ঘ সময় প্রিয়ার লাগল কেন। এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এ-ও হতে পারে যে হয়ত কোনোদিনই জানানো হত না অভিযোগ, কিন্তু বিশ্বজুড়ে “মি-টু” আন্দোলন চলছিল বলেই অন্য সকলকে দেখে অভিযোগ জানানোর সাহস সঞ্চয় করতে তিনি পেরেছিলেন। কিন্তু যে সব মহিলারা যৌন হেনস্থার শিকার হয়েও আপোস করতে বাধ্য হন, তাঁরা যদি কখনও মুখ খোলেন, তখন সচরাচর তার পিছনে একটি প্রত্যক্ষ কারণ থাকে যার ফলে ধৈর্য্য তথা আপোসের বাঁধটি তাঁদের ভেঙ্গে যায়। সুকুমার রায়ের হেডঅপিসের বড়বাবুর মত “একলা বসে ঝিমঝিমিয়ে হঠাৎ গেলেন ক্ষেপে”— এমনটি বাস্তবে হয় না। সেই কারণেই পূর্বে ঘটা কোনো যৌন হেনস্থার অভিযোগ যদি দীর্ঘ সময় পর তোলেন কোনো মহিলা, তখন তার প্রত্যক্ষ কারণটি নির্ণয় করা আবশ্যক নচেৎ যৌন হেনস্থার অভিযোগের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপব্যবহারের সম্ভাবনা দূর করা যায় না।
মহিলাদের তরফ থেকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ পুরুষের বিরুদ্ধে অমোঘ অস্ত্র। কিন্তু এমন অস্ত্রের অপপ্রয়োগ (অর্থাৎ মিথ্যা অভিযোগ) যে মহিলাদের পক্ষে সামগ্রিকভাবেই অসম্মানের তা অনস্বীকার্য। এ জিনিস মহিলাদেরকে যৌন সামগ্রী হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিকেই মান্যতা দেয়, সে মহিলা যত সফল বা খ্যাতনাম্নীই হোন না কেন। তাই এমন অভিযোগ উঠলে তা মিথ্যা কি না তা খতিয়ে দেখা আবশ্যক। কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন আইএএস রূপান দেওল বাজাজও। অভিযুক্ত পুরুষটিও ছিলেন অতিবিখ্যাত আইপিএস কে পি এস গিল। কিন্তু রূপান বাজাজ প্রতিবাদ করতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করেন নি, প্রতিবাদ করেছিলেন তৎক্ষণাৎ। কিন্তু সমস্ত মহিলার পরিস্থিতি রূপান বাজাজের মত না-ও হতে পারে। যৌন হেনস্থাকারীর সঙ্গে কাউকে কাউকে আপোস করতেও হতে পারে। কিন্তু সে আপোস যে আদতে নারীর আত্মমর্যাদা বোধের সঙ্গে আপোস, নিজের অন্তর্মনে আপোসকারিনী তা ভুলে যেতে পারেন না কারণ মনের অগোচর কিছুই নয়। জীবনসংগ্রামের স্বার্থে, সামাজিক প্রতিষ্ঠা বজায় রাখতে আত্মমর্যাদাবোধের সঙ্গে এমন আপোস করতে হয় বহু মহিলাকে। তাঁদের মধ্যে নিতান্ত সাধারণরাও যেমন থাকেন, তেমনই থাকেন খ্যাতনাম্নী সেলেব্রিটিরাও। কিন্তু আপোসকারিনী যদি একদা হঠাৎ প্রতিবাদিনী হয়ে ওঠেন, তখন সে হেন প্রতিবাদের প্রত্যক্ষ কারণটি জানতে পারা সত্য ও ন্যায়ের স্বার্থে অনিবার্য।
২০২২ সালের অগাস্ট মাসের একখানি ভিডিওতে সাক্ষী মালিককে দেখা গিয়েছে ভারতীয় কুস্তির উন্নতির পিছনে একদা কুস্তিগীর এবং বর্তমানে রাজনৈতিক বাহুবলী তথা সাংসদ ব্রিজভূষণ শরণ সিং’এর ভূমিকার অমায়িক প্রশংসা করতে। আগস্ট থেকে ২০২৩’এর জানুয়ারীর মধ্যবর্তী সময়ে যদি কিছু ঘটে থাকে তবে সেই প্রত্যক্ষ কারণটি জানা অনিবার্য। সাক্ষী মালিক এবং বিনেশ ফোগটকে দেখা গিয়েছে ব্রিজভূষণ শরণ সিং’এর সঙ্গে অনাবিল হাসিমুখ নিয়ে ছবি তুলতেও। নিয়মিত যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া সত্ত্বেও কর্মক্ষেত্রে আপোসের স্বার্থে মুখে শুকনো হাসি নিয়ে ছবি তোলা কোনো অবাস্তব ঘটনা নয়। কিন্তু যে হাসিতে মুখের সঙ্গে চোখকেও অকপট হাসতে দেখা যায়, তেমন হাসি কি যৌন হেনস্থাকারীর পাশে দাঁড়িয়ে সম্ভব? সাক্ষী, বিনেশরা যদি অভিনেত্রী হতেন তাহলে এ প্রশ্ন উঠত না। কিন্তু তাঁরা কুস্তিগীর। মুখে এমন নিখুঁত খুশির আভাস যদি অভিনয় হয়ে থাকে তবে তেমন অভিনয় তাঁরা করলেন কেন সে প্রশ্ন ওঠা উচিত। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসের মধ্যে প্রত্যক্ষ কারণটি কি যা কুস্তিগীরদের প্রতিবাদের মঞ্চে টেনে আনল?
Comments
Post a Comment